ওয়েব ডেস্ক: ভাই সামনে থাকলেও লড়াইটা আসলে দাদার। গতবারের মার্জিন তো ধরে রাখতেই হবে। তারওপর আবার আবার হলদিয়া-সহ তিন বিধানসভা আসন পুনরূদ্ধারের চ্যালেঞ্জ। শুভেন্দু অধিকারীর মর্যাদার লড়াইয়েই নজর কাড়ছে তমলুকের উপ-নির্বাচন।
প্রচারে তেমন ভিড় নেই, সব ভিড় ব্যাঙ্কে-ATM-এ। জনসংযোগে সেখানেই হানা দিচ্ছেন প্রার্থীরা। এমন ভোট আগে দেখেনি তমলুক। লোকসভা উপ-নির্বাচনে খাতায়-কলমে চতুর্মুর্খী লড়াই। যদিও ভোটাররা বলছেন কংগ্রেসের অস্তিত্ব তেমন চোখে পড়ছে না। শাসক দলের বিরুদ্ধে যা লড়াই তার সবটাই সিপিএম-বিজেপির। লড়াইয়ের ময়দানে শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী। দলের সর্বক্ষণের কর্মী মন্দিরা পণ্ডাকে প্রার্থী করেছে সিপিএম। বিজেপি প্রার্থী পেশায় অধ্যাপক অম্বুজ মোহান্তি। কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়িয়েছেন আরেক শিক্ষক, দলের জেলা নেতা পার্থ বটব্যাল।
শুভেন্দু অধিকারী সাংসদ পদ ছেড়ে রাজ্য মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ায় তমলুক লোকসভা আসনে উপ-নির্বাচন হচ্ছে। দু-হাজার চোদ্দো সালে লোকসভা নির্বাচনে তমলুকে বামফ্রন্ট প্রার্থীকে দু-লাখ ছেচল্লিশ হাজার
চারশো একাশি ভোটে হারিয়ে দেন তিনি। গত বিধানসভা নির্বাচনে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ময়না, নন্দকুমার, মহিষাদল এবং নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসনে জয়ী হয় তৃণমূল। তমলুক, পাঁশকুড়া-পূর্ব, হলদিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হয় বামেরা। গত লোকসভা নির্বাচনে এই সাত বিধানসভাতেই এগিয়ে ছিল তৃণমূল।
নন্দীগ্রাম থেকে নিজে বড় ব্যবধানে জিতলেও পুরনো কেন্দ্র তমলুকের ৩ বিধানসভায় সিপিএমের জয়ে অস্বস্তিতে পড়েন শুভেন্দু অধিকারী। এ বার বাড়তি সতর্ক তিনি। ভাইয়ের হয়ে প্রচারে গত কয়েকসপ্তাহে তমলুক চষে ফেলেছেন তিনি। উপ-নির্বাচনে তৃণমূলের ইস্যু উন্নয়ন। কন্যাশ্রী-শিক্ষাশ্রী-যুবশ্রীর মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনকল্যাণমূলক প্রকল্প। আর বিরোধীদের ইস্যু রাজনৈতিক সন্ত্রাস, ভয় দেখিয়ে দল ভাঙানো, চাকরি দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাত্, জেলায় পরিবারতন্ত্রের দাপট।
উপ-নির্বাচনের লড়াইয়ে কালো টাকার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপে ভরসা রাখছে বিজেপি। রয়েছে আরও একটি ফ্যাক্টর। দলের একাংশ না চাইলেও তমলুকের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষণ শেঠকে দলে নিয়েছে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব। নন্দীগ্রামের ঘটনায় যাঁকে নিয়ে এত সমালোচনা তাঁকে দলে নিয়ে কতটা লাভ হল তার হিসেব মিলবে তমলুকের উপ-নির্বাচনে।
গত বিধানসভা ভোটে বাম-কংগ্রেসের জোট ছিল। এ বার জোট না থাকায় বাড়তি সুবিধা পাবে তৃণমূল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জোট মানতে না পারায় যে সব কংগ্রেস কর্মীরা তৃণমূলকে ভোট দিয়েছিলেন তাঁদের একটা অংশের ভোট আবার কংগ্রেসে ফেরত আসতে পারে। সব হিসেব-নিকেশের পর তমলুকের সাত বিধানসভা আসনেই শুভেন্দু
তাঁর ভাইকে সম্মানজনক লিড দিতে পারেন কিনা, এখন সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।