জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঘন ঘন তীব্র তাপপ্রবাহ এবং দাবানল তৈরি হচ্ছে। এর জেরে বিশ্ব জুড়ে বাতাসের গুণমান দিন দিন আরও খারাপ হবে। বিষয়টি মানুষের স্বাস্থ্য ও বাস্তুসংস্থানের ব্যাপক ক্ষতি করবে। বুধবার রাষ্ট্রসংঘের তরফে এই সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা 'ওয়ার্ল্ড মেটিওরলজিক্যাল অর্গানাইজেশন' এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানেই তারা সতর্ক করেছে, দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মিলে আগামী শতাব্দীতে কোটি কোটি মানুষকে ক্ষতির মুখে ফেলবে। আসন্ন ভয়াবহ এই ক্ষতি থেকে বিশ্বকে রক্ষা করতে আগে থেকেই তাই পদক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। 'ওয়ার্ল্ড মেটিওরলজিক্যাল অর্গানাইজেশন' বায়ুর গুণমান এবং জলবায়ু সংক্রান্ত তাদের এই বুলেটিনে ২০২১ সালে সাইবেরিয়া এবং উত্তর আমেরিকা জুড়ে ভয়াবহ দাবানলের প্রভাবের বিষয়টি গবেষণা করেছে। রিপোর্টটিতে এতে দেখা গিয়েছে, দাবানলের কারণে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। পূর্ব সাইবেরিয়াতেও বায়ুর দূষণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা সাম্প্রতিক কালের মধ্যে দেখা যায়নি।
২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়ে কম ব্যাসের ক্ষুদ্র কণাগুলি বিশেষভাবে ক্ষতিকারক বলে মনে করা হচ্ছে। এই কণাগুলি ফুসফুস বা শ্বাসতন্ত্রের ভেতরে প্রবেশ করে। 'ওয়ার্ল্ড মেটিওরলজিক্যাল অর্গানাইজেশন'-এর প্রধান পেতেরি তালাস বলেন, পৃথিবী উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দাবানল এবং সংশ্লিষ্ট বায়ুদূষণ বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সামগ্রিক ভাবে মানবস্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এটি। এ ছাড়াও এই ঘটনা বাস্তুতন্ত্রের উপরও ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। বায়ুমণ্ডল থেকে পৃথিবীপৃষ্ঠ পর্যন্ত দূষণ ছড়িয়ে পড়বে। গত দু'দশকে দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার আয়তন ক্রমশ কমেছে। তৃণভূমি ও সাভানা অঞ্চলে দাবানল কমেছে বলে এটা ঘটেছে। রাষ্ট্রসংঘ বলেছে, উত্তর আমেরিকা, আমাজন ও অস্ট্রেলিয়ার অঞ্চলে দাবানল বেড়েছে। দাবানল ছাড়াও উষ্ণ জলবায়ু বাড়িয়ে তুলতে পারে দূষণ। উষ্ণ জলবায়ু বায়ুর গুণমানকে আরও খারাপ করে দিতে পারে।
পেতেরি তালাস বলেন, এ বছর ইউরোপ ও চিনে ব্যাপক দাবদাহ দেখা গিয়েছে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে উচ্চ বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থা, প্রখর সূর্যতাপ এবং বাতাসের ধীর গতি। এগুলি উচ্চমাত্রার দূষণকে তরান্বিত করে।
তালাস আরও বলেন, আমরা দাবদাহের মাত্রা, তীব্রতা এবং সময়কাল আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি। এতে বায়ুর মান আরও খারাপ হতে পারে। এই পরিস্থিতির তিনি একটি নামও দিয়েছেন-- 'ক্লাইমেট পেনাল্টি'। যাকে আমরা প্রকৃতির প্রতিশোধও বলতে পারি। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওজোনস্তর ক্যানসার সৃষ্টিকারী অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেয়। ওজোনস্তর ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা মানুষের স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে ওজোন স্তরের নিয়মিত ক্ষতি হচ্ছে।