রণজয় সিংহ: রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মনোনয়ন পত্র জমা নিয়ে সংঘর্ষ সামনে আসছে। কোথাও খুন কোথাও মারামারি, কোথাও আবার গোঁজ প্রার্থীদের নিয়ে পারিবারিক বিবাদ। তার মধ্যেই একেবারে অন্য ছবি মালদহের গাজলে। সেখানে সালিসিসভা ডেকে বলে দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েতে ভোট দিলে দিতে হবে ১০,০০০ টাকা জরিমানা।
আরও পড়ুন-প্রার্থীপদ প্রত্যাহার না করায় বাবাকে মারধর, ছেলেকে অপহরণ! কাঠগড়ায় তৃণমূল
ঘটনা মালদহের গাজল ব্লকের দেওতলা পঞ্চায়েতের। সেখানে গ্রামে সভা ডেকে বলে দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটে দিলে দশ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। কেন এমন ঘোষণা? ব্লকের বড় জগদীশপুর, দোআঁশ এলাকায় নেই কোনও পাকা রাস্তা। সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদা হয়ে রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায়। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে এনিয়ে আন্দোলন হচ্ছে। কোনও কাজ হয়নি। এলাকায় পানীয় জলের জন্য সরকারি কোনও উদ্যোগ নেই। অনেকক্ষেত্রে পুকুরের জলই একমাত্র ভরসা। ভোট আসলেই রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধির আসেন। অনেক প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয় না।
সামনের মাসেই পঞ্চায়েত ভোট। তাই সেই ভোটকেই কাজে লাগাতে চাইছেন এলাকার মানুষ। এলাকায় সালিশি সভা ডেকে তারা ঠিক করেছেন, কেউ ভোট দিতে গেলে দশ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। এলাকার বাসিন্দা সন্তোষী মণ্ডল বলেন, এমন পরিস্থিতি দীর্ঘদিনের। তাই এবার এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন গ্রামের মানুষজন। গ্রামের অন্য এক বাসিন্দা বলেন, গত ু৪৫ বছর ধরে এই গ্রামে বাস করছি। চারদিকে চকচকে রাস্তাঘাট। কিন্তু আমাদের গ্রামের অবস্থা সেই একই। রাস্তা নেই, পানীয় জল নেই, বিদ্যুত্ নেই। বর্ষাকালে জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। তাই এই রাস্তা নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না।
এদিকে, দলের নির্দেশকে মান্যতা দিলেন বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক তথা বিদায়ী সহকারী সভাধিপতি চন্দনা সরকার। স্বামীর কাছে হেরে গেলেন। দলের নির্দেশ মতো মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলেন বৈষ্ণবনগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়িকা চন্দনা সরকার। মালদা জেলা প্রশাসনিক ভবনে এসে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন তিনি। মালদা জেলা পরিষদের ৪৩ নম্বর আসনের হয়ে মনোনয়নপত্র পেশ করেছিলেন বৈষ্ণব নগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়িকা চন্দনা সরকার। দলের নির্দেশে তার স্বামী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা পরিতোষ সরকারও মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। একই আসনে এই দম্পতি তৃণমূল কংগ্রেস হয়ে মনোনয়ন করেছিলেন। যা নিয়ে যথেষ্ট চাপেও ছিলেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। শেষমেষ রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ আজ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলেন বৈষ্ণবনগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক চন্দনা সরকার। এই বিষয়ে বিধায়িকার স্বামী পরিতোষ সরকার জানান, এর আগে আমি কখনো ভোটে দাঁড়ায়নি। আমার স্ত্রী ভোটে দাঁড়াতো। এবছর দল আমাকে টিকিট দিয়েছে।