ভবানন্দ সিংহ: গতকাল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বোমাবাজিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যানিং। গুলিবিদ্ধ হন ১ জন। পাশাপাশি ভাঙড়ে বাসন্তী হাইওয়ের উপরে বিবিরহাটে তৃণমূল-আইএসএফের লড়াইয়ে তুলকালাম হয়। বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনেও অশান্তির খামতি নেই। উত্তর দিনাজপুরের চোপরায় চলল গুলি। আহত ২-৩ জন।
আরও পুড়ুন-রণক্ষেত্র ভাঙড়ের বিবিরহাট, ক্যানিংয়ে বোমা-বন্দুকের তাণ্ডব, গুলিবিদ্ধ ১
অভিযোগ, মিছিল করে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যাচ্ছিলেন বাম-কংগ্রেস প্রার্থীরা। পথে তাদের উপরে হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। তাতেই কয়েকজন আহত হন। গতকাল থেকেই বাম-কংগ্রেস প্রর্থীরা অভিযোগ করছিলেন, তাদের মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বিডিও অফিস ঘিরে রাখা হয়েছে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার কোনও উপায় নেই। গতকাল এনিয়ে প্রতিবাদ করেছে বিজেপি। আজ বাম-কংগ্রেসের কয়েক হাজার সমর্থক দাসপাড়া এলাকায় থেকে রওনা দেয় চোপড়ার উদ্দেশ্যে। পথে চোটিয়াখোল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তাদের উপরে হামলা করা হয়। জানা যাচ্ছে কমপক্ষে ২-৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
গতকাল থেকেই বিরোধীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করার দাবি উঠছিল। আজ এই ঘটনার পর প্রশাসনের দিকে আরও বড় অভিযোগ উঠে গেল। যেখানে আজ গুলি চলেছে সেখানে আজ কোনও পুলিসের ব্যবস্থা ছিল না বলে জানা যাচ্ছে। ফাঁকা মাঠের কাছে মিছিলে বন্দুক নিয়ে হামলা চালনা করা হয়। দুদিন আগেই মনোনয়ন জমা দিতে আসার আগে বেশ কয়েকজন বাম-কংগ্রেস প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। তিন ঘণ্টা আটকে রেখে তাদের ছাড়া হয়। বলে দেওয়া হয় কেউ যেন মনোনয়ন জমা না দেয়। ওই ঘটনার মধ্যেই আজ চোটিয়াখড় এলাকায় গুলি-বোমা নিয়ে হামলা হয়। জানা গিয়েছে, গুলিবিদ্ধ একজনের মৃত্যু হয়েছে।
ওই ঘটনা নিয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনজাপুর-সব জায়গাতেই তৃণণূলের ঘর ভাঙছে। ফলে তারা আক্রমাণাত্মক হয়ে উঠছেন। এটাই তৃণমূলের চেহারা। দালালের ভূমিকা নিচ্ছে পুলিস। দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ভাঙড়ে মহিলা প্রার্থীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। থানায় আশ্রয় নিলে থানা বের করে দিয়েছে।
অন্যদিকে, অধীর চৌধুরী বলেন, দশ দিন ধরে এরকম পরিস্থিতি চলছে। কয়েকদিন আগে বাম-কংগ্রেসের ১০ জনকে নেতাকে অপহরণ করে নেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি আমি চিঠি লিখে জানিয়েছিলাম। বলেছিলাম চোপরা অগ্নিগর্ভ। সেই চেপারাতে আজ গুলি চালানো হল।
ওই ঘটনা নিয়ে চোপরার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান বলেন, আমাদের কেউ ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। ওরা নিজেদের মধ্য়ে মারামারি করেছে। ওরা কয়েকজন মিলে আজ নমিনেশন করতে আসছিল তিন থেকে চারশো জন। পথে ওরা মারামারি করেছে।
ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে আহত ৩ জনকে। অন্যদিকে, চোপরা হাসপাতালে আনা হয়েছে আরও তিন জনকে। তাদের দাবি চোটিয়াখোল পঞ্চায়েত এলাকায় তাদের উপরে গুলি চালানো হয়েছে। ২০-২৫ জন বন্দুকধারীতাদের উপরে হামলা চালিয়েছে। আহতেদের শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। ইসলামপুর হাসপাতালে ৩ জনকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিসে এনিয়ে এখনও কিছু বলছে না।