সোমা মাইতি: গোরুপাচারের অভিযোগে মুর্শিদাবাদের এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। তারা জানিয়েছে, ধৃতের নাম জেনারুল শেখ। বাড়ি রঘুনাথগঞ্জ থানা এলাকার বড় শিমুলিয়ায়। শনিবার বহরমপুর থেকে তাকে পাকড়াও করেন গোয়েন্দারা। গোরুপাচার মামলায় এনামুল হক নামে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। জেনারুল তার ঘনিষ্ঠ বলেই সিআইডির দাবি। এমনকী, এনামুলের অবর্তমানে গোরুপাচারের কারবার জেনারুল দেখতেন বলেই গোয়েন্দারা দাবি করেছেন। জেনারুলের পাচারের কায়দা নিয়েও রীতিমত তাজ্জব গোয়েন্দাদের একাংশ।
সূত্রের দাবি, পাচারের পথে গোরু বাজেয়াপ্ত করল কাস্টমস। পরে সেগুলি তারা নিলাম করে বিক্রি করত। নিলাম থেকে সেই গোরু কিনে সেগুলিকে ফের পাচার করতেন জেনারুল। বছর কয়েক আগে সে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। সিআইডির দাবি, কাস্টমসের বদলে বিএসএফের একাংশের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলে জেনারুল। বিএসএফের ওই কর্মী যে গোরুগুলিকে পাচারের হাত থেকে আটকাতেন সেগুলিকে সরকারি খাতায় না দেখিয়ে জেনারুল পাচার করতেন। যদিও কোনো নির্দিষ্ট বিএসএফ কর্মীর নাম এখনো জানতে পারেনি সিআইডি। তবে তাদের একাংশের দাবি, জেনারুলকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে এই চক্রের বাকিদের নাম জানার চেষ্টা করা হবে। পুলিসের কেউ জড়িত ছিল কিনা, তাও দেখা হবে।
আরও পড়ুন: Halisahar, CBI: এবার সিবিআই নজরে বীজপুরের বিধায়ক এবং কাঁচড়াপাড়ার চেয়ারম্যান, বাড়িতে তল্লাশি
অগস্ট মাসে এডিজি সিআইডির নির্দেশে উত্তর ২৪ পরগনার মাটিয়া এবং মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানার ২০১৭ এবং ২০১৯ সালের দুটি গোরু পাচার মামলার নতুন করে তদন্ত শুরু হয়। সেই মামলা গুলিতে স্থানীয় পুলিস কোনওমতে চার্জশিটও দিয়েছিল। রঘুনাথগঞ্জের মামলাতেই জেনারুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গোরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের হেফাজতে এখন এনামুল হক, অনুব্রত মণ্ডল ও সায়গল হোসেন। রেডারে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ আব্দুল লতিফ। অনুব্রতর প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সেই লতিফ এখন পলাতক। অনুমান করা হচ্ছে, লতিফ পালিয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু ইলমাবাজারের গোরুর হাটে সাধারণ একজন দড়ি বিক্রেতা কীভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হল সেটাই এখন তদন্ত করে দেখছে সিবিআই। এই গোরুপাচার মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারি সংস্থা মনে করছে এই লতিফকে গ্রেফতার করলেই অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে।। কারন এই ইলামবাজার হাটই ছিল বীরভূমের গরু পাচারের করিডর। এই লতিফের মাধ্যমেই সায়গলের কাছে টাকা পৌঁছে যেত বলে দাবি করা হয়েছে। এমনকি এনামুলেরও ডান হাত ছিল এই লতিফ। আবার গোরু কীভাবে পাচার হতো কোথা দিয়ে যাবে কীভাবে মুর্শিদাবাদ পৌঁছাবে সমস্তটাই নিয়ন্ত্রণ করত এই লতিফ। তাই মনে করা হচ্ছে এই লতিফকে গ্রেফতার করলেই অনেক প্রশ্নেরই উত্তর পাওয়া যাবে।