পিয়ালী মিত্র ও প্রসেনজিৎ মালাকার: সিবিআই হেফাজতে খুন? লালন শেখের মৃত্যুর তদন্তভার নিল সিআইডি। রামপুরহাটে পৌঁছল রাজ্যের গোয়েন্দা দল। শুধু তাই নয়, আদালতের নির্দেশে লালনের বাড়ির সিল করে খুলে দিল সিবিআই। স্ত্রী ও মেয়ের দাবি, বাড়ি কার্যত খালি! তল্লাশির নামে লুঠপাঠ চলেছে।
গত ২১ মার্চ বীরভূমের রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে খুন হন প্রাক্তন তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখ। এরপর রাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রাণ হারান ৭ জন। নেপথ্যে কারা? মূল অভিযুক্ত ছিলেন লালন শেখ। ঘটনার পর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি। ঝাড়খণ্ডের একটি গ্রামে ধরা পড়ার পর, রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্য়াম্পে রাখা হয়েছিল লালনকে।
সোমবার সিবিআইয়ে অস্থায়ী ক্য়াম্পের শৌচাগারে পাওয়া যায় বগটুইকাণ্ডে মূল অভিযুক্তের ঝুলন্ত দেহ, তাও আবার বিবস্ত্র অবস্থায়! পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, 'সিবিআই আধিকারিকরা নাকি তাঁদের বলেছিলেন, শেষ দেখা দেখে নিন, আর দেখতে পাবেন না! লালনের শারীরিক অবস্থাও ভালো ছিল না। তাঁকে জল ও খাবারও ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছিল না'। এমনকী, মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য় ৫০ লক্ষ টাকাও দাবি করেছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা!
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee | Lalon Seikh: 'সিবিআই হেফাজতে কীভাবে মৃত্যু লালন শেখের'? সরব মুখ্যমন্ত্রী
এদিন রামপুরহাট হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয় লালন শেখের। কিন্তু দেহ এখনও নেননি পরিবারে লোকেরা। সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে রামপুরহাট থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন লালনের স্ত্রী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এবার তদন্তে নামল সিআইডি। সিবিআই ভূমিকা খতিয়ে দেখবেন রাজ্যের গোয়েন্দারা। মামলা রুজু করা হয়েছে খুন, তোলাবাজি-সহ একাধিক ধারায়।
এর আগে, বগটুইকাণ্ডে তদন্তের একাধিকবার লালন শেখের বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। শেষপর্যন্ত বগটুই গ্রামে ওই বাড়িটি সিল করে দেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশে এদিন সিল খোলা হল। তালা ভেঙে বাড়িতে ঢুকলেন লালনের স্ত্রী ও মেয়ে। তাঁদের দাবি, যখন সিল করা হয়েছিল, তখন বাড়িতে নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা ও আসবাবপত্র ছিল। এখন সেসব কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না! কেন? সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে তল্লাশির নামে বাড়িতে লুঠপাট চালানোর অভিযোগ করেছেন তাঁরা।