চম্পক দত্ত: তৃণমূল পরিচালিত পৌরসভার বিরুদ্ধে পানীয় জলে কর নেওয়া সহ একাধিক দূর্নীতির অভিযোগ তুলে ওয়ার্ডে পোস্টারিং করল বিজেপি। সেই প্রতিবাদী পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। যদিও জলের উপর কর নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে পৌরসভা। এই পোস্টারিংকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
এমই ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল পৌরসভায়। জানা গিয়েছে ঘাটাল পৌরসভার ১৭টি ওয়ার্ডই তৃণমূলের দখলে রয়েছে। অভিযোগ,তৃণমূল পরিচালিত এই পৌরসভাতে নেওয়া হচ্ছে পানীয় জলের কর। একে ঘিরে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে চরম শোরগোল। পানীয় জলে কর এই নিয়ে পৌরবাসীদের মধ্যেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে বিজেপির পক্ষথেকে জল কর নেওয়া হচ্ছে কেন এমন অভিযোগ তুলে এলাকায় পোস্টারিং করা হয়।
বিজেপির দাবি,অন্যন্য সমস্ত পৌরসভা এলাকায় পানীয় জলের উপর কর নেওয়া হয়না কিন্তু ঘাটাল পৌরসভা জল কর কেনও নেওয়া হবে। এই নিয়ে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড জুড়ে পোস্টারিং করেছে বিজেপি। বিজেপির আরও অভিযোগ শাসকদলের সমস্যা হওয়ায় রাতারাতি তারা পোস্টার ছিঁড়েও ফেলেছে। পোস্টারে বিজেপির নাম উল্লেখ করে লেখা রয়েছে, ‘অন্যান্য পৌরসভা জল কর ছাড় দিলেও ঘাটাল পৌরসভা জল কর নিচ্ছে কেনও তৃণমূল কাউন্সিলর জবাব দাও’।
এছাড়াও তাঁদের আরও দাবি পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডে বাঁধের রাস্তা ঢালাইয়ের কাজ শুরু করেছে ঘাটাল পৌরসভা। সেই রাস্তার কাজের আগে ওয়ার্ডের বাসিন্দা অথবা বেনিফিসিয়ারি কমিটিকে না জানিয়েই কাজ শুরু করেছে পৌরসভা। এই রাস্তার কাজেও দূর্নীতির অভিযোগ তুলে ২ নং ওয়ার্ড জুড়ে পোস্টারিং করা হয়েছে। এতে লেখা হয়েছে, ‘বাঁধের রাস্তার কাজে কাটমানি নিচ্ছ কেনও তৃণমূল কাউন্সিলর জবাব দাও’।
আরও পড়ুন: Howrah Millitant Arrest: হাওড়ায় জঙ্গিকাণ্ডে সিরিয়া যোগ? NIA তদন্তের সম্ভাবনা
পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড জুড়ে এরকমই একাধিক পোস্টারিংকে ঘিরে চাঞ্চল্য ঘহুরু হয়েছে এলাকায়। শুরু হয়েছে শাসক বিরোধী রাজনৈতিক তরজাও। এই বিষয়ে ঘাটাল পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি নেত্রী কবিতা মুখার্জি বলেন, ‘আমরা এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়েই পোস্টারিং করেছি। মাননীয়া তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জল কর ছাড় অথবা মকুব করার কথা ঘোষণা করেছেন। অন্যান্য মহকুমা অথবা পৌরসভাতে জল কর নেওয়া হয়না। তাহলে ঘাটাল পৌরসভা কেনও নেবে এই প্রশ্ন তোলেন তিনি। জল কর মকুবের দাবিতে এই পোস্টার বলে জানানো হয়েছে। এছাড়াও ওয়ার্ডে বাঁধের রাস্তা ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে কিন্তু ওয়ার্ডের বেনিফিসিয়ারি কমিটি বা স্থানীয়দের জানানো হয়নি। রাস্তার কাজেও কাটমানি খাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
এই বিষয়ে বিজেপিকে পাল্টা আক্রমন শানিয়ে ২ নং ওয়ার্ড তৃণমূলের সভাপতি উদয়শংকর সিংহ রায় বলেন, জল কর বলে কিছু নেওয়া হয়না। পরিষেবা কর একটা নেওয়া হয়, যেটা করোনাকালে বন্ধ ছিল আপাতত তা আবার চালু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। জল কর নেওয়া হয় এটা নিয়ে ভুল বার্তা ছড়াচ্ছে বিরোধীরা বলে দাবি করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: Canning: বারবার প্রেমে বাধা দিচ্ছেন, প্রেমিকার মাকে গলা কেটে খুন করলেন প্রেমিক
আর ওয়ার্ডে ঢালাই রাস্তা তৈরিতে দূর্নীতি হয়েছে তা বিজেপি প্রমান করে দিতে পারলে ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদত্যাগ করবে বলেও তিনি জানান।
এই বিষয়ে ঘাটাল পৌরসভার চেয়ারম্যান তুহিন কান্তি বেরা বলেন, ‘আমরা জলের কর নিইনা, আমরা যে জলটা দিই তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মাসে ৫০ টাকা করে নেওয়া হয়। জলকর নেওয়া হয়না কারণ রসিদে কর বলে কোনও উল্লেখ করা হয়না। পৌরসভা যাই বলুক ওয়ার্ডের বাসিন্দারাও দাবি করছেন তাদের থেকে জলের কর হিসাবে টাকা নেওয়া হয় যা করোনাকালে বন্ধ ছিল এবং পুনরায় তা চালু হয়েছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং যেখানে জল কর মকুবের ঘোষণা করেছেন সেখানে তৃণমূল পরিচালিত ঘাটাল পৌরসভার বিরুদ্ধে জল কর নেওয়ার অভিযোগকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পৌর এলাকায়।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)