জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বিশ্বের অন্য়তম সেরা ফিল্ডিং টিম ভারত (India Cricket Team)। বিগত কয়েক বছর ভারতের ফিল্ডিং বিভাগে যে উচ্চতা স্পর্শ করেছে, তা বাইশ গজের চর্চার অন্য়তম বিষয়বস্তু। ভারতীয় দলের ফিল্ডিং উৎকর্ষের বিপ্লব শুরু হয়েছিল বিরাট কোহলি (Virat Kohli) ও রবি শাস্ত্রীর (Ravi Shastri) হাত ধরে। তৎকালীন ক্য়াপ্টেন ও কোচ সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার মানদণ্ডই হচ্ছে 'ইয়ো-ইয়ো' (yo-yo test) টেস্ট। ফিটনেসের এই পরীক্ষায় পাশ করতেই হবে। এর কোনও অন্য়থা হবে না। তবে জাতীয় ক্রিকেট অ্য়াকাডেমি (National Cricket Academy) ওরফে এনসিএ (NCA), বিরাট-শাস্ত্রীদের তৈরি করা এই বাধ্যতামূলক নিয়ম তুলে দিয়েছে। এমনটাই রিপোর্ট দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ার।
আরও পড়ুন: এবার মিশন 'দ্য জুয়েল অফ আফ্রিকা', নতুন কোচকে নিয়ে উড়ান একঝাঁক তরুণ তুর্কীর
এখন কী জানা যাচ্ছে? এনসিএ-র নথিতে স্পষ্ট লেখা হয়েছে যে, স্ট্যান্ডার্ড ফিটনেস পরীক্ষা এখন আর খেলোয়াড়দের জন্য নির্বাচনের মাপকাঠি নয়। তাহলে খেলায়াড়দের ফিটনেস নিয়ে কী ভাবা হচ্ছে? ২০১৯ বিশ্বকাপের পর হার্দিক পান্ডিয়া ও জসপ্রীত বুমরার মতো স্টার ক্রিকেটারদের বারবার চোট পাওয়ার পরেই বিসিসিআই-এর মেডিক্য়াল টিম ও এনসিএ ঠিক করে নেয় যে, এই ফিটনেস পরীক্ষার মানদণ্ড আর রাখা যাবে না। এনসিএ-র দুর্দান্ত টিমে রয়েছেন সব তাবড় ফিজিও, স্ট্রেন্থ অ্য়ান্ড কন্ডিশনিং কোচেরা। তারা আপাতত তিনটি বিষয়ের উপর জোর দিচ্ছেন। এক) ন্য়াশনাল ফিটনেস টেস্টিং ক্রাইটেরিয়া বা এএফটিসি দুই) পারফরম্য়ান্স টেস্টিং ব্যাটারি ও প্রিভেনশন টেস্টিং ব্যাটারি।
এএফটিসি-তে থাকবে ১০-১০ ও ২০-২০ মিটারের স্প্রিন্ট, লং জাম্প, ইয়ো-ইয়ো টেস্ট ও ডেক্সা স্ক্য়ান (শরীরের ফ্য়াট পার্সেন্টেজের রিপোর্ট)। এনসিএ-র নথিতে বলা হয়েছে যে এই সংখ্যাগুলি একটি বয়স গোষ্ঠীর ক্রীড়াবিদদের গড় থেকে প্রাপ্ত এবং এটি শুধুমাত্র গ্রুপ বেঞ্চমার্ক এবং নির্বাচনের মানদণ্ড নয়৷ এগুলি শুধুমাত্র ফিটনেস পরিমাপক। দলের তরুণ এবং কেন্দ্রীয় চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়দের জন্য আলাদা পরীক্ষাই হবে। ইয়ো-ইয়ো টেস্ট এবং ২০ মিটার স্প্রিন্ট থাকছে উদীয়মান ক্রিকেটারদের জন্য রাখা হয়েছে। তাঁদের মানদণ্ড হতে হবে ১৬.৭। তবে বোর্ডের চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের জন্য সেই মানদণ্ড কমে হয়েছে ১৬.৫। একটা সময় ছিল যখন ইয়ো-ইয়ো টেস্ট নিয়মিত ছিল। কিন্তু এনসিএ-তে এসব আজ অতীত। কারণ কেন্দ্রীয় চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটাররা ফিটনেসের একটি পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছেন বলেই, তাঁদের জন্য় আর এসবের কোনও পাঠ রাখা হয়নি।
বিসিসিআইয়ের এক সৃত্রকে উদ্ধৃত করে টিওআই জানিয়েছে, 'নিয়মিত ক্রিকেটাররা সারা বছর প্রচুর ক্রিকেট খেলেন। সুতরাং তাঁদেক জন্য এফটিসি পরীক্ষা করা অন্যায্য হবে বলেই মত এনসিএ-র। ঠিক এই কারণেই এখন চোট প্রতিরোধ এবং পারফরম্যান্সের পরীক্ষায় ফোকাস সরানো হয়েছে। টিম ইন্ডিয়ার স্ট্রেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ সোহম দেশাই, ফিজিও যোগেশ পারমার, থুলসি এবং কমলেশ জৈনরা, ২০২৩ সালের ওডিআই বিশ্বকাপ এবং এই বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দারুণ কাজ করেই খেলোয়াড়দের ফিট রেখেছেন।'
প্রিভেনশন টেস্টিং বা প্রতিরোধ পরীক্ষা ঠিক কী? এই পরীক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশই হল প্রতিরোধ পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় ওভারহেড স্কোয়াট, ওয়াকিং লাঞ্জ, গ্লুট ব্রিজ হোল্ড এবং হাফ নিলিং মেডিসিন বল ছোড়ার মতো বিভিন্ন পরীক্ষা রয়েছে। এই পরীক্ষাগুলি সংক্ষিপ্ত এবং এই ধরনের পরীক্ষার মাধ্যমে শুধুমাত্র একজন খেলোয়াড়ের ভঙ্গি পরীক্ষা করা হয়। যদি কোনও নির্দিষ্ট খেলোয়াড়কে যদি এগুলো করার সময়ে ঘাম ঝরাতে হয়, তাহলে বুঝে নিতে হয় যে, তার চোট-আঘাতের প্রবণতা রয়েছে।এই পরীক্ষার পাশাপাশি, জিপিএস ভেস্ট এবং হুপ ব্যান্ড রয়েছে, যা দৌড়ানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দেয়। রানিং-বোলিং ম্য়াট্রিক্স একজন খেলোয়াড়ের ঘুম এবং রিকভারির তথ্য়ও সংগ্রহ করে। জসপ্রীত বুমরা, হার্দিক পান্ডিয়া, শ্রেয়স আইয়ার এবং রবীন্দ্র জাদেজার ক্ষেত্রে মেডিক্য়াল টিম ২০২২-২৩ সালে এই পরীক্ষাগুলি করেছিল। অস্ত্রোপচার হচ্ছে একদম শেষ রাস্তা।
আরও পড়ুন:কেন পুনরায় আবেদন করেননি দ্রাবিড়? কোচের মুখ ফেরানোর আসল তথ্য ফাঁস!
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)