নিজস্ব প্রতিবেদন: বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় আডবাণী-জোশী-উমা-সহ ৩২ জন অভিযুক্তই বেকসুর। অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ, সব অভিযোগই খারিজ করলেন লখনউ আদালতের বিচারক। রায়ে বলা হয়েছে, সমাজ বিরোধীদের হাতে আচমকাই, মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা ঘটে যায়। সঙ্ঘ পরিবারের নেতারা বরং করসেবকদের নিয়ন্ত্রণ করারই চেষ্টা করেছিলেন। গতকাল, বুধবার এই রায়ের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনরা। তাঁদের প্রশ্ন, তাহলে আডবাণীরা সেদিন বাবরি মসজিদের সামনে কী করছিলেন? কেউ কেউ মস্করা করে বলছেন, আসলে মানবশৃঙ্খল করে বাবরি রক্ষা করছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী, উমা ভারতীরা।
ভারতীয় দণ্ডবিধির অন্তত ৮টি ধারায় আডবাণীদের বিরুদ্ধে মামলা করে সিবিআই। যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাবরি মসজিদ ধ্বংসে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ। এ ছাড়াও গোষ্ঠী সংঘর্ষে মদত দেওয়া, ধর্মস্থান ধ্বংস করা, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত ও ধর্মীয় বিভাজনে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। জাতীয় সংহতিতে আঘাত এবং বেআইনি জমায়েত ও পাথর ছোঁড়ার কথাও ছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার চার্জশিটে। অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের ধারায় বিচার হবে কিনা, তা ঠিক করতেই মামলার জল গড়ায় শীর্ষ আদালতে। যার জেরে দীর্ঘদিন নিম্ন আদালতে বিচার থমকে যায়। প্রায় তিনদশক পার করে বুধবার আদালত রায় দেয়, আডবাণী-জোশী-উমা-সহ ৩২ জন অভিযুক্তই বেকসুর। অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ সব অভিযোগই খারিজ। আদালতের পর্যবেক্ষণ, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই। বাবরি মসজিদ ধ্বংস সংক্রান্ত ছবি আদালতগ্রাহ্য প্রমাণও নয়। পূর্ব-পরিকল্পনা করে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়নি। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা আচমকাই ঘটে যায়। সঙ্ঘ পরিবারের নেতারা করসেবকদের নিয়ন্ত্রণ করারই চেষ্টা করেছিলেন। উন্মত্ত জনতার হাতে মসজিদ ধ্বংস হয়, সমাজবিরোধীদের হাত ছিল। মসজিদ ধ্বংসে প্রত্যক্ষভাবে বা পরোক্ষে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং আরএসএসের কোনও ভূমিকা ছিল না।
রায়ের পরই মস্করা শুরু হয় টুইটারে। নেটিজেনরা আডবাণীদের ছবি কাঁটছাঁট করে টুইট করেছেন। কেউ লিখেছেন, এভাবেই মানবশৃঙ্খল করে বাবরি বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন এলকে আডবাণী।
In short ..
— ashutosh bade (@ashutosh_bade) September 30, 2020
We had made such a human chain, but we couldn't save Babri.#BabriMasjidDemolitionCase pic.twitter.com/bPBirizcMo
They were actually forming a human chain to protect the Babri.. pic.twitter.com/jRV2GuafJK
— அனாதி बाल्टी लोटा (@balti_lota) September 30, 2020
They were formed "Human chain" to protect Babri
— INDIAN (@Mayursa077) September 30, 2020
Understood#सत्यमेवजयते#BabriDemolitionCase #Ayodhya #AyodhyaRamMandir #Advani#बाबरीमस्जिद#BabriMasjidDemolition #BabriMasjid #BabriVerdict pic.twitter.com/PCkNwQpX1l
কারও টুইট, বিশাল সংখ্যক করসেবক বাবরি মসজিদ বাঁচাতে মানবশৃঙ্খল তৈরি করছেন।
Kar sewaks formed human chain to protect Babri.... pic.twitter.com/IsinKWLXBi
— Akhandanand Tripathi (@KaaleenBhaaiya) September 30, 2020
People are making human chain
— Krishna Patil (@Krishna27615941) September 30, 2020
For save babri... pic.twitter.com/1wtlD9qhJk
মোদী ও আডবাণী পাশাপাশি। লেখা, বিচারক কী বললেন? জিজ্ঞেস করলেন নরেন্দ্র মোদী। আডবাণীর উত্তর, বিক্ষোভকারীদের থেকে বাবরি বাঁচাতে মানবশৃঙ্খল তৈরি করেছিলাম।
Modi Ji: Kya bole Judge se ?
— महावीर जैन, ಮಹಾವೀರ್ ಜೈನ, Mahaveer Jain (@MahaveerVJ) September 30, 2020
Advani Ji: We formed human chain to protect Babri Masjid from Protesters.#BabriMasjidDemolitionCase pic.twitter.com/rjnqpah6lC
এর পাশাপাশি একের পর এক টুইট। প্রতিটাই রসিকতার ছলে কটাক্ষ।
When huge no of "Carsevaks" were gathered to save Babri by forming human chain.@theskindoctor13 @coolfunnytshirt @onetiponehand_ @Being_Humor #BabriDemolitionCase #BabriVerdict pic.twitter.com/qXeN3UVFYT
— Tejas Shukla (@bigdreams2002) September 30, 2020
আদালতে বাবরি ধ্বংসের নানা ভিডিও এবং স্টিল ছবি জমা দেয় সিবিআই। অভিযুক্তদের আইনজীবীরা দাবি করেন, সেসবই তাঁদের মক্কেলদের ফাঁসানোর জন্য বিকৃত করা হয়েছে। সেই দাবিতেই কার্যত সায় দিয়ে, অরিজিনাল নেগেটিভ জমা না করায়, ছবিগুলির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন বিচারক। নানা মামলায় সিবিআইয়ের ব্যর্থতা নতুন নয়। বাবরি
মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সাক্ষ্য প্রমাণ আইন মেনে চলেনি বলেও জানান তিনি। রায় ঘোষণার পরই আডবাণীর বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। আডবাণী ও জোশীকে ফোনে অভিনন্দন জানান অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা।
আরও পড়ুন- বাংলা জয়ে অমিতের ভোটমন্ত্র 'ভোকাল ফর লোকাল', পুজোর আগেই রাজ্যে