ডিমাপুর: আস্তে আস্তে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে নাগাল্যান্ডের শহর ডিমাপুর। বৃহস্পতিবার ধর্ষণে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির গণপিটুনিতে মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভারতের উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। হাজার হাজার উন্মত্ত জনতা জেল ভেঙে ওই ব্যক্তিকে প্রকাশ্য রাস্তায় নিয়ে এসে নৃশংসভাবে খুন করে। এর পরেই ডিমাপুরে জারি হয় কারফিউ। পুলিসের গুলিতে মারা যায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তিও। আহত হয় আরও ৫। এই ঘটনায় প্রত্যক্ষ জড়িত সন্দেহে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ২২জন। তবে, অভিযুক্ত ধর্ষক অসমের বাসিন্দা হওয়ায় এই মুহূর্তে প্রতিবেশী এই দুই রাজ্যের সরকারের মধ্যে রাজনৈতিক টানাপোড়েন তুঙ্গে।
ডিমাপুরে কারফিউ এখন কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। রাস্তায় যানবাহন চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক। সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৩টে অবধি দোকানপাট খুলে রাখার অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। তবে, সতর্কতা বজায় রাখার জন্য এখনও ডিমাপুরে ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা সাসপেন্ড রয়েছে।
এই ঘটনা নাগাল্যান্ডে বসবাসকারী অ-নাগা জনগনের মধ্যে চরম আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে। গণপিটুনির শিকার ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তির পরিবারের তরফ থেকে নাগাল্যান্ডে অন্যরাজ্যের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার অভাবের অভিযোগ আনা হয়েছে। মৃতের আত্মীয় আব্দুলের দাবি ''ওর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছিল। আমরা রাজ্য সরকারের কাছে ন্যায় বিচার দাবি করছি।''
বহু নাগা নেতা এই ঘটনার নিন্দা করছেন, ওনেকে সতর্কতা জারি করেছেন। প্রাথমিকভাবে দাবি করা হয়েছেন গণপিটুনিতে মৃত সঈদ ফরিদ খান বাংলাদেশ থেকে আশা এক অনুপ্রবেশকারী। কিন্তু, তদন্তে দেখা গেছে ফরিদ খান ভারতীয়। তাঁর বাবা বিএসএফ-এর কর্মী ছিলেন। তাঁদের পরিবার বহুদিন থেকেই অসমের করিমগঞ্জের বাসিন্দা।
ফরিদ খানের ভাই সঈদ সুবেরুদ্দিন খান বলেছেন ''আমার ভাই কোনও অন্যায়ই করেনি। কেন তাকে শাস্তি দেওয়া হল। সরকার অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক।''
এই ঘটনার পর অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ সরসারি কেন্দ্রের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেছেন ''জেলের নিরাপত্তার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্বে ছিল। যারা এই গণপিটুনি আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে। নাগরিকদের সুরক্ষার দায়িত্ব কেন্দ্রকেই নিতে হবে।''