জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আপাতত আর সম্ভব নয় বিমান পরিষেবা! আগামী বুধবার (৩ মে) ও বৃহস্পতিবার (৪ মে) সব বিমান বাতিল করল গো ফার্স্ট (Go First) এয়ারলাইন। তীব্র আর্থিক সংকটই এই বিরাট সিদ্ধান্তের কারণ। এই মুহূর্তে সংস্থার মাত্র ৫০ শতাংশ বিমানই চলছে। কারণ গো ফার্স্ট মার্কিন সংস্থা প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনি ওরফে পিঅ্যান্ডডব্লিউ-র (Pratt & Whitney, P&W) থেকে কোনও অতিরিক্ত ইঞ্জিন পাচ্ছে না। গো ফার্স্টের এই ঘোষণার পরেই তাদের নোটিস ধরিয়েছে কেন্দ্রের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (Directorate General of Civil Aviation)। ডিজিসিএ (DGCA) গো ফার্স্টের থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর চেয়েছে, যে কেন পূর্বনির্ধারিত সময়ের সকল বিমান বাতিল করার আগে এয়ারলাইন তাদের সিদ্ধান্তের কথা কেন্দ্রকে জানায়নি! ডিজিসিএ-কে উত্তর দিতে না পারলে গো ফার্স্ট বেসরকারি বিমান চলাচল নিয়ম লঙ্ঘনের আওতায় পড়ে যাবে।
গো ফার্স্ট এই বিষয়ে বিবৃতিতে জানিয়েছে, পিঅ্যান্ডডব্লিউ তাদের ক্রমাগত এমন সব ইঞ্জিনই পাঠাচ্ছে, যা বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। যার ফলে গো ফার্স্টের পক্ষে ২৫টি বিমানকে আর ওড়ানো সম্ভব নয়। বাতিল প্রতিটি বিমানই এয়ারবাস এথার্টিটুনিও এয়ারক্রাফ্ট ফ্লিট। গো ফার্স্টের কর্ণধার ভারতীয় বহুজাতিক সংস্থা ওয়াদিয়া গ্রুপ আবার এর মধ্যে দিল্লিতে ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইবুনালের কাছে দেউলিয়া হওয়ার মামলা দায়ের করেছে। গো ফার্স্টের চিফ এক্সিকিউটিভ কৌশিক খোনা সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন, কোম্পানিকে বাঁচানোর জন্য, তাঁদের কাছে এই অনভিপ্রেত সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া আর কোনও রাস্তা ছিল না। গো ফার্স্টের ২৫টি বিমান বসে যাওয়া মানে ৫০ শতাংশ বিমানের কার্যক্ষমতা হারানো। এভিয়েশন সেক্টরে কোনও এয়ারলাইনসের কাছে, পর্যাপ্ত পরিমাণে বিমান না থাকা মানেই, তা দ্রুত আর্থিক তহবিল শুষে নেওয়ার লক্ষণ।
গো ফার্স্ট জানিয়েছে যে, সিঙ্গাপুরের সংস্থার মাধ্যমে তারা পিঅ্যান্ডডব্লিউকে কম করে ১০টি সার্ভিসযোগ্য অতিরিক্ত লিজড (বড় এয়ারলাইন্সের জন্য অত্যন্ত কার্যকর এবং অর্থনৈতিক বিকল্প) ইঞ্জিনের অর্ডার দিয়েছিল। যা চলতি বছর ২৭ এপ্রিলের মধ্যে চলে আসার কথা ছিল। এবং অতিরিক্ত আরও ১০টি ইঞ্জিন (প্রতি মাসে একটি করে) পাওয়ার কথা ছিল ডিসেম্বরের শেষে। গো ফার্স্টের অভিযোগ যে, পিঅ্যান্ডডব্লিউ এই অর্ডার মানেনি। পিঅ্যান্ডডব্লিউকে গো ফার্স্ট নির্দেশ দিয়েছে, কোনও রকম দেরি না করে ইঞ্জিনগুলিকে পাঠানোর যাবতীয় দায়িত্ব নিতে হবে। পিঅ্যান্ডডব্লিউ জানিয়েছে, তাদের হাতে আর অতিরিক্ত লিজড ইঞ্জিন নেই আর। তবে গো ফার্স্ট উঠে যাচ্ছে না। সাময়িক এই সমস্যা কাটিয়ে তারা পুরোদমে ১০০ শতাংশ বিমান নিয়েই কাজ করতে পারবে। তবে সেটা হতে হতে অগস্ট-সেপ্টেম্বর লেগে যাবে।
আরও পড়ুন: Rail News: প্রবীণ নাগরিকদের টিকিটে ছাড় বাতিল, রেলের ঘরে এসেছে ২,২৪২ কোটি টাকা!
গো ফার্স্টের প্রোমোটাররা গত তিন বছরে এয়ারলাইন্সের জন্য অতিরিক্ত ৩২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে, বিগত ২৪ মাসে বিনিয়োগের পরিমাণ ২৪০০ কোটি টাকা। এয়ারলাইন্সের জন্মলগ্ন থেকে সংস্থার আনুমানিক ৬৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেছে। ২০২১ থেকে ২০২৩-এর মধ্যে গো ফার্স্টের মার্কেট শেয়ার আট থেকে ১০.৮ শতাংশ পড়ে গিয়েছে। গো ফার্স্টে ৫০০০ কর্মী কাজ করেন। গো ফার্স্ট তাদের যাবতীয় সমস্যার কথা জানিয়েছে কেন্দ্রকে।