ওয়েব ডেস্ক: হজে ভর্তুকির খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখবে কেন্দ্র। সেজন্য ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সংখ্যালঘু মন্ত্রক। তবে কমিটি গঠন মানে এখনই ভর্তুকি প্রত্যাহার নয়। এই আশ্বাস বারবার দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।
হজ। ধর্মপ্রাণ মুসলিমের পালনীয় পাঁচটি কর্তব্যের অন্যতম। আর্থিক সামর্থ ও শরীর সুস্থ থাকলে জীবনে একবার হজ করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু, এই তীর্থযাত্রা যথেষ্টই ব্যয়বহুল। গরিব হজযাত্রীদের তাই ভর্তুকি দেয় ভারত সরকার।
হজ কমিটি মারফত হজে গেলে একজনের খরচ হয় ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। ভর্তুকিসহ হজযাত্রায় যাতায়াত ভাড়া পড়ে সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার টাকা। প্রাইভেট বিমান সংস্থা মারফত হজে যাতায়াত ভাড়া লাগে কমপক্ষে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এর সঙ্গে যোগ হয় ট্রাভেল এজেন্সি, হোটেল ভাড়া এবং আনুষঙ্গিক খরচ।
প্রতি বছরই ভারত থেকে লক্ষাধিক মানুষ হজে যান। ২০১৬ সালে হজ করেন ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৯০৩ জন ভারতীয়। ৯৯ হাজার ৯০৩ জন হজযাত্রী গিয়েছিলেন হজ কমিটি মারফত। ৩৬ হাজার তীর্থযাত্রী প্রাইভেট ট্রাভেল এজেন্সি মারফত নিজ খরচায় হজে গিয়েছিলেন
এবছর ভারত থেকে হজযাত্রীর সংখ্যাটা আরও বাড়বে। কারণ ভারত থেকে যাওয়া হজযাত্রীর কোটা বাড়িয়ে দিয়েছে সৌদি আরব। নিরাপত্তার কারণে ২০১২ সালে প্রতি দেশেরই হজযাত্রীর কোটা ২০% ছেঁটে দেয় সৌদি আরব। ভারতের হজযাত্রীর কোটা ১ লক্ষ ৭০ হাজার থেকে কমে হয় ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ২০ জন। মোদী সরকারের লাগাতার দৌত্যের পর ভারতের হজের কোটা বাড়াতে রাজি হয়েছে সৌদি প্রশাসন
এই বছরেই হজে ভারতের কোটা ৩৪ হাজার ৫০০ বাড়িয়েছে সৌদি প্রশাসন। ভারত থেকে এই বছর হজে যেতে পারবেন ১ লক্ষ ৭০ হাজার ৫২০ জন। প্রতিবছরই হজযাত্রীদের ভর্তুকি দিতে কয়েকশো কোটি টাকা খরচ হয় জাতীয় কোষাগার থেকে। এই খরচের যৌক্তিকতা কী? এতে কি আদৌ সংখ্যালঘু মুসলিমদের কোনও উপকার হয়? বিতর্ক বহুদিনের। দুহাজার বারোয় ভর্তুকি তুলে দিতে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
১০ বছরের মধ্যে ধাপে ধাপে তুলে দিতে হবে হজযাত্রায় সরকারি ভর্তুকি। ২০১২ সালে এই সংক্রান্ত এক মামলায় রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ভর্তুকির টাকা খরচ করতে হবে সংখ্যালঘুদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানলে ২০২২ সাল থেকে হজে ভর্তুকি দিতে পারবে না কেন্দ্র
হাতে সময় তাই খুব বেশি নেই। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে ছয় সদস্যের কমিটি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রক। একাধিক বিষয় খতিয়ে দেখবে কমিটি। হজে ভর্তুকি তুলে দিয়ে গরিব তীর্থযাত্রীরা কতটা আর্থিক অস্বাচ্ছন্দ্যের মুখে পড়বেন? ভর্তুকি উঠে যাওয়ার পর যাতায়াত ভাড়া সস্তা রাখলে কি হজযাত্রীদের সুরাহা হবে?
ভর্তুকি উঠে যাওয়ার পর হজযাত্রীদের কি আর কোনওভাবে আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য দিতে পারে কেন্দ্র? শুধুমাত্র ভর্তুকি তুলে দিতেই কমিটি তৈরি হয়নি। বরং হজযাত্রীদের আর্থিক বোঝা কমানোর বিকল্প পথ খোঁজাই হবে কমিটি লক্ষ্য। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বারবার এই দাবি করা হয়েছে।