শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়: বিশ্ববিদ্যালগুলির উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতে নয়া মোড়। রাজভবনের নির্দেশিকা জারির পর রাজভবনের বিশেষ সচিবকে এবার কড়া চিঠি পাঠাল বিকাশভবন। সেই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে সব বিশ্ববিদ্যালয়েও। রাজ্য নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকরা উপাচার্যের নির্দেশ মেনেই চলবেন, রাজভবনের এমন নির্দেশিকা জারির পরই সক্রিয় হল রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন-ফের নিম্নচাপের ভ্রুকুটি; কত দিন দক্ষিণবঙ্গে থাকবে বৃষ্টির দাপট, জানাল হাওয়া অফিস
ওই চিঠি রাজভবনে পাঠানো হয়েছে রাজ্য সরকারে তরফে। রাজভবনের স্পেশাল সচিবের ওই নির্দেশিকা জারি করা ঠিক হয়নি। রাজ্যে এই মুহূর্তে যে নিয়ম বলবত রয়েছে তা হল যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আচার্য যদি যোগাযোগ করতে চান তাহলে তা করতে হবে রাজ্য শিক্ষা দফতরের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আইন রাজ্যপালকে ওই ধরনের নির্দেশিকা জারির অধিকার দেয় না। রাজ্যপালের সচিবালয় থেকেও ওই নির্দেশিকা জারি করা যায় না। রাজ্যপালের যে এক্তিয়ার তাতে ওই ধরনের কোনও নির্দেশিকা জারি করতে পারেন না। রাজভবনের বিশেষ সচিবকে বলা হয়েছে তিনি রাজ্যপালকে ওই নির্দেশিকা তুলে নিতে বলুন।
রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়কেই ওই চিঠির প্রতিলিপি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ থেকে স্পষ্ট রাজ্যপালের ওই নির্দেশিকার স্পষ্ট বিরোধিতা করেছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি তা প্রত্যাহারের জন্যও আর্জি জানানো হয়েছে।
রাজভবনের তরফে যে চিঠি বিশ্ববিদ্য়ালয়গুলিকে পাঠানো হয়েছিল সেখানে বলা হয়, রাজ্য সরকারের নির্দেশ রেজিস্ট্রার বা কোনও আধিকারিক মানতে পারবেন না। বরং মেনে চলছে হবে উপাচার্যের নির্দেশ। যদি এমন কোনও নির্দেশ এসে পৌঁছয় তাহলে তিনি তা উপাচার্যের অনুমোদন সাপেক্ষে পালন করবেন। সেই চিঠিরই পাল্টা দিল রাজ্য সরকার। একপ্রকার সোজাসুজিই বলা হল রাজভবন বা রাজ্যপালের ওই ধরনের কোনও চিঠি দেওয়ার এক্তিয়ার নেই।
এমন এক সংঘাত নিয়ে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ইউজিসির গাইডলাইন্স না মেনে যদি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয়, রাজ্যপালকে যদি কালো পতাকা দেখানো হয় তাহলে তার পরিণতি কী আর হবে! শিক্ষার অধিকার বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্যপাল। এতে যাদের গাত্রদাহের কারণ হচ্ছে তারাই এইসব চিঠি লিখছে। রাজ্য সরকার তো বলেছিল আদালতে যাব। তা তাহলে যান সেখানে। কিন্তু ফল তো সেই ভর্তসনা। ফরমানের রাজনীতি চলে না। ছাত্ররা যাতে বঞ্চিত না হয় তার জন্য রাজ্যপাল উপাচার্য নিয়োগ করছেন।
এনিয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, একজন কড়া ভাষায় বলছেন মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করতে হবে। আর একজন কড়া ভাষায় বলছেন রাজ্যপালকে উপাচার্য করতে হবে। সরকার কড়া ভাষায় চিঠি দিয়ে দিচ্ছেন রাজভবনকে। মুখ্যমন্ত্রী কড়া নির্দেশ দেন আর অপরাধ বাড়তে থাকে। এসবের কোনও মানে হয় না। এসব লোক দেখানো ঝগড়া। মনে রাখতে হবে এতে শিকার হচ্ছে ছাত্ররা। শিক্ষা ব্যবস্থাকে নষ্ট করা অধিকার কারও নেই।