সৌমেন ভট্টাচার্য: গৃহবধূর রহস্যমৃত্যু। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামীকে গ্রেফতার করল লেকটাউন থানার পুলিস। পরিবারের দাবি, ২০১৮ সালে সল্টলেকের বাসিন্দা পায়েল রায় (২৯)-এর সাথে বিয়ে হয় দক্ষিণদাঁড়ির বাসিন্দা সুমন রায়ের। সম্বন্ধ দেখাশোনা করেই বিয়ে হয় তাঁদের। দম্পতির এক সন্তানও হয়। সন্তানের বয়স এখন ৩ বছর। প্রথম প্রথম তাঁদের সুমন ও পায়েলের মধ্যে সংসারে মোটের উপর সব ঠিকঠাক-ই ছিল। কিন্তু, গত মাস ছয় ধরে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। দুজনের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। অভিযোগ, কখনও কখনও তা হাতাহাতিতেও পৌঁছে যায়। সুমনের সন্দেহ হয়, স্ত্রী পায়েল পরকীয়ায় জড়িত। তাঁর অন্য কোথাও অন্য কোনও সম্পর্ক রয়েছে। পরপুরুষের সঙ্গে পায়েলের সন্দেহভাজন ঘনিষ্ঠতা নিয়েই ঝামেলার সূত্রপাত বলে অনুমান পায়েলের পরিবারের।
এর পাশাপাশি তাদের আরও অভিযোগ, পায়েলকে ঠিক করে খেতে দেওয়াও হত না। সংসারে অশান্তি নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেখানে শনিবার রাতেও দুজনের মধ্যে ব্যাপক ঝামেলা হয় বলে দাবি স্বামী সুমনের। তারপরই রবিবার সকাল থেকে নাকি দুজনের কথা বন্ধ ছিল। এরপর রবিবার সন্ধেয় বাড়িতে কেউ ছিল না। শুধু সুমন ও পায়েল ছিল। তখনই নাকি ফাঁকা ঘরে সুমনের অজান্তে আত্মঘাতী হয় পায়েল। সুমনের দাবি তেমনই। সন্ধের পরে পায়েলের পরিবারের কাছে ফোন যায় যে, পায়েল আত্মঘাতী হয়েছে। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ফোন পেয়েই হাসপাতালে পৌঁছয় পায়েলের পরিবার। সেখানে গিয়েই তাঁরা পায়েলের মৃত্যু সংবাদ জানতে পারে।
আরও পড়ুন, Child Murder: বাবা ও জেঠিমার বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জের? হাওড়ায় খুন সদ্যোজাত
এরপরই পায়েলের পরিবারের তরফে লেকটাউন থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে আরজিকর হাসপাতাল চত্বর থেকেই সুমনকে গ্রেফতার করে লেকটাউন থানার পুলিস। মৃতা পায়েলের পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে খুন করা হয়েছে। কারণ সুমনের ঘাড়ে নখের আঁচড়ের দাগ রয়েছে। খুনের সময় ধস্তাধস্তি হয়। সেই সময়ই সুমনের ঘাড়ে পায়েলের নখের আঁচড় লাগে বলে দাবি পরিবারের। অভিযোগের ভিত্তিতে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। পুলিস সূত্রে খবর, দেহের আজই ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে মনে করছে পুলিস। সবমিলিয়ে এই ঘটনায় দানা বেঁধেছে রহস্য়। এলাকা চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গোটা পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।