নিজস্ব প্রতিবেদন : ৫ বছর ধরে আলাপ! তবুও সেকথা গোপন করে যান। অভিযুক্তের নামও বানিয়ে বলেন! পূর্ব পরিচয় থাকা সত্ত্বেও কেন নির্যাতিতা তা লুকিয়ে পুলিসকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন? কেনই বা অভিষেক পান্ডের নাম অমিতাভ বসু বলেছিলেন? এই সব প্রশ্নের মীমাংসা করতে আজ ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে আনন্দপুরকাণ্ডের নির্যাতিতা তরুণীকে। ওদিকে ঘটনার পর আড়াই দিন পেরতে চলল, কিন্তু এখনও অধরা অভিযুক্ত অভিষেক পান্ডে। তাঁর খোজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে আনন্দপুর থানার পুলিস। একাজে আনন্দপুর থানাকে সাহায্য করছে লালবাজারের এআরএস। পুলিস সূত্রে খবর, অভিযুক্তের খোঁজে রাতব্যাপী একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিস। এদিকে মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে অভিযুক্তের।
প্রাথমিক তদন্তের পর জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে অভিষেক পান্ডের বিয়ে হয়েছিল। দু-এক বছর সংসারও করেছিল। কিন্তু তারপর ডিভোর্স হয়ে যায়। স্ত্রীর ওপর তিনি নানাভাবে অত্যাচার করতেন বলে অভিযোগ। যখন তখন বিভিন্ন মহিলাকে ফ্ল্যাটে নিয়ে আসতেন। উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন অভিষেক। ডিভোর্সের আগে থেকেই নির্যাতিতার সঙ্গে আলাপ ছিল তাঁর।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাত ৮টা নাগাদ নয়াবাদের ফ্ল্য়াটের সামনে থেকে হন্ডাসিটি করে আনন্দপুরের নির্যাতিতাকে ঘুরতে নিয়ে যায় অভিষেক পাণ্ডে নামে ওই অভিযুক্ত। প্রথমে পাঁটুলির একটি রেস্তোরাঁয় যান তাঁরা। সেখানে খাওয়া-দাওয়া সেরে বাইপাসের আশপাশে ঘোরাঘুরি করেন কিছুক্ষণ। তারপর অজয়নগর, গড়িয়া, কালিকাপুর হয়ে আনন্দনগর। তরুণী জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে নয়াবাদে বাড়িতে ছাড়ার জন্য বললে চৌবাঘার দিকে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে অভিষেক। বাধা দিতে গেলে চলন্ত গাড়িতেই মারধর করা হয় তরুণীকে। উল্লেখ্য, আনন্দপুরকাণ্ডে নির্যাতিতা মহিলাকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হন নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায়। সোমবার তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিত্সকরা। এই মুহূর্তে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।
রাতের কলকাতায় তরুণী নিগ্রহকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিস ওই মহিলাকে নিয়ে পাটুলির রেস্তোরাঁয় যায়। সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ম্যানেজারকেও। বাইপাসে যে সব সিগন্যালে গাড়িটি দাঁড়িয়েছিল, সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়। সেইসব সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেই গাড়ির নম্বর উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। তারপরই আটক করা হয় গাড়িটি কিন্তু ঘটনা নাটকীয় মোড় নেয়, যখন সামনে আসে অভিযুক্তের নাম অমিতাভ বসু নয়, অভিষেক পান্ডে। আর নির্যাতিতা তরুণীর সঙ্গে দীর্ঘ ৫ বছরের সম্পর্ক ছিল অভিযুক্তের। সূত্রের খবর, দুজনে এক সময়ে দুজনের সহকর্মীও ছিলেন। পূর্ব যাদবপুরের বাসিন্দা অভিযুক্ত অভিষেক।
আরও পড়ুন, করোনায় আক্রান্ত বিধাননগরের ডেপুটি মেয়র তাপস চ্যাটার্জি, ভর্তি হাসপাতালে