দেবারতি ঘোষ: সোমবার ২২ শ্রাবণ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ বার্ষিকী (Rabindra Nath Tagore Death Anniversary)। এ দিনই সামনে এল বিশ্বকবির এক অমূল্য রত্ন। কলকাতা কর্পোরেশনের (Kolkata Municipal Corporation) রেকর্ড রুম থেকে উদ্ধার হল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindra Nath Tagore) মৃত্যু সম্পর্কিত একটি খাতা। রেকর্ড রুমের পুরনো দস্তাবেজ ঘাঁটতে ঘাঁটতে সেই খাতা Zee ২৪ ঘণ্টার হাতে এসেছে। যা এখনও সযত্নে রাখা রয়েছে কলকাতা পুরসভার সংগ্রহশালায়। গোটা বিশ্বের কাছে যিনি বরেণ্য। যাঁর পরিচয় বিশ্বকবি। কিন্তু কলকাতা পুরসভার ওই খাতায় রবীন্দ্রনাথ অন্য পরিচয়ে পরিচিত। তিনি ছিলেন কলকাতার জমিদার। কবিগুরুর মৃত্যুর দিন শহর কলকাতা কত লোক সমাগম হয়েছিল? তৎকালীন সময়কার গেজেটে কবির মৃত্যুর পর বিশেষ এক সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল। যা আজও সেখানেই সংরক্ষিত রয়েছে।
৫ নম্বর এসএন ব্যানার্জি রোড। কলকাতা পুরসভার মূল সদর দফতর। সেখানেই রয়েছে পুরসভার রেকর্ড রুম। যা আদতে অমূল্য সম্পদের এক বৃহৎ রত্নখনি। বর্তমান কম্পিউটারের যুগে শহরের প্রতিটা মানুষের জন্ম-মৃত্যুর হিসেব রাখা অনেক সহজ। তবে দীর্ঘদিন ধরে কলকাতা পুরসভায় খাতা রাখা ছিল। যেখানে শহরের ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল থেকে অট্টালিকাবাসী, প্রতিটা মানুষের জন্ম-মৃত্যুর ইতিহাস উল্লেখ থাকত। কিন্তু পুরসভার পুরনো বাড়ির ড্যাম্প ধরা ঘরে ইতিহাসের সেই অকাট্য দলিলগুলো আজ ধুলোয় ঢেকেছে। ইতিহাস সংরক্ষণ করতে এবার নড়চড়ে বসেছে পুর কর্তৃপক্ষ। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নতুন করে তৈরি হবে রেকর্ড রুম। সেখানেই সংরক্ষিত থাকবে ইতিহাসের সমস্ত দলিল।
বাইশে শ্রাবণ Zee ২৪ ঘণ্টার নজরে এল রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু সংক্রান্ত কিছু তথ্য। যেখানে রয়েছে চমকে দেওয়ার মতো বেশ কিছু বিষয়। তৎকালীন সময়ে ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখ করা থাকত ব্যক্তির ধর্ম, সামাজিক শ্রেণী এবং জীবিকা। যা পরে বন্ধ হয়ে যায়। আর পাঁচ জনের মতো সেখানে রয়েছে কবিগুরুর মৃত্যু পরবর্তী নথিও। বিশ্ববরেণ্য কবিকে সেখানে জমিদার বা ল্য়ান্ডওনার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্রাহ্ম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কিন্তু পুরসভার ডেথ সার্টিফিকেটে তাঁকে ব্রাহ্মণ হিসেবে উল্লেখ করা রয়েছে। যে ডেথ সার্টিফিকেটে ডাক্তার হিসেবে সই করেছেন স্বয়ংবিধানচন্দ্র রায়। সাহিত্যিক, কবি, লেখক কোনটাই নয়; বরং পুরসভার রেকর্ড বলছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন কলকাতা শহরের একজন জমিদার।
তৎকালীন সময়ে ডেথ সার্টিফিকেট তৈরির আগে কোন ব্যক্তির মৃত্যুর সংক্রান্ত তথ্য তোলা হত শ্মশানে থাকা একটি নির্দিষ্ট খাতায়। শ্মশান থেকে ওই খাতা চলে আসত কলকাতা পুরসভার মূল সদর দফতরের। এখনও সেখানেই সযত্নে রক্ষিত রয়েছে কবিগুরুর এই সম্পদ।