নিজস্ব প্রতিবেদন: যথার্থ অর্থেই ভ-এ ভবানীপুর, ভ-এ ভারত হয়ে উঠেছিল উপনির্বাচন। নজর ছিল গোটা দেশের। কিন্তু বিজেপির কৌশল খাটল না। হাইপ্রোফাইল প্রচারেও কাজ হল না। এতসব ‘না’র জেরেই কি ভবানীপুরে ধাক্কা? সর্বশক্তি দিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্রে প্রভাব ফেলতে পারল না তারা। সাংগঠনিক দুর্বলতা ছিল, ভোটে হারার পর স্বীকার করেছেন বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল (Priyanka Tibrewal)।
গণনার শুরু থেকে শেষ। হেস্টিংসে বিজেপির দফতর শুনশান। ভবানীপুরের ফলাফল নিয়ে দেওয়াল লিখনটা কি পড়েই ফেলেছিলেন বিজেপি নেতা -কর্মীরা? গোটা দেশ যে উপ-নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে ছিল, সেই ভবানীপুরেই মহা-বিপর্যয়। ভবানীপুরে রেকর্ড ব্যবধানে জয়ী মমতা। ২০২১-র থেকে দ্বিগুণেরও বেশি ব্যবধানে এল এই জয়।
মুখ্যমন্ত্রী ঘরের পিচে ম্যাচ। নতুন সরকার। নতুন পরিস্থিতি। সবমিলিয়ে অ্যাডভান্টেজ মমতা (Mamata Banerjee)। নন্দীগ্রামের পুরনাবৃত্তি হওয়ার সুযোগ খুব, খুব কম। এসব জেনেও ঝাঁপিয়েছিল বিজেপি। টার্গেট ছিল মূলত দুটো- মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া টক্কর। এবং বিধানসভা ভোটের তুলনায় মুখ্যমন্ত্রীর মার্জিন কমানো। টার্গেট পূরণে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপায় বিজেপি। ওয়ার্ড ধরে ধরে কৌশল তৈরি হয়। প্রচারে আসেন হরদীপ পুরী, স্মৃতি ইরানি সহ একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। শেষদিনে ৮০ জায়গায় প্রচার চালায় গেরুয়া শিবির। পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন অর্জুন সিং,বিশেষ দায়িত্বে শুভেন্দু অধিকারী।
তবে একুশের টার্গেট বাংলার মতো এখানেও শুধুই ব্যর্থতা। প্রচারে টক্কর দিয়েও কেন এই বিপর্যয়? তা হলে কি সংগঠনই পার্থক্য গড়ে দিল? স্বীকার করে নিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। তাঁর কথায়,''ভবানীপুরে সংগঠন পোক্ত ছিল না।'' ম্যাচ হারলেও নিজেকে 'ম্যান অব দ্য ম্যাচ' বলছেন বিজেপি প্রার্থী। সেই সঙ্গে খোঁচাও দিয়েছেন। প্রিয়াঙ্কার (Priyanka Tibrewal) কথায়,''দিদিকে জয়ের জন্য প্রণাম জানাই। ছাপ্পা ভোট দিতে পাঠালে দয়া করে পার্টির লোককে পাঠাবেন না। কাল পর্যন্ত যে বাচ্চাকে চিনতেন না, সে ২৫ হাজার ভোট পেয়েছে। এটা মমতার গড় বলত ওরা। বাচ্চাকে হারাতে মন্ত্রিসভাকে রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছিলেন।''
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সাংগঠনিক দুর্বলতা যে আছে, তা ভোটের দিনই স্পষ্ট হয়। মুখ্য নির্বাচনী এজেন্টকে পাশে নিয়ে সেদিন বুথ থেকে বুথে ছুটে বেড়িয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী। অন্যদিকে মমতা নিজকে ঘরবন্দি রাখলেও দলনেত্রীর হয়ে দিনভর তত্পর ছিলেন ফিরহাদ, দেবাশিস কুমার সহ অন্তত দু-ডজন তৃণমূল নেতা। আর একুশের ভোট আর উপ-নির্বাচন আলাদা। নন্দীগ্রাম আর মমতার ঘরের মাঠ ভবানীপুরও এক নয়। সেই অঙ্কেই বিজেপির ভুল হয়েছে। দিনের শেষে হিসাব তাই মিলছে না।
আরও পড়ুন- ভবানীপুরে ফলপ্রকাশের পর নীরবেই Dilip-Suvendu; জনতার রায় কতখানি প্রতিফলিত, প্রশ্ন Sukanta-র