মৌমিতা চক্রবর্তী:: বাংলার পরিস্থিতি ভয়ংকর। এরাজ্যে শয়ে শয়ে মিনি কাশ্মীর রয়েছে, আমি নিজে তার সাক্ষী। রবিবার রাজ্যে এসে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কাশ্মীর ফাইলস ছবির পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। পরিচালক বলেন, বাংলা থেকে বিপজ্জনক ছবি উঠে আসছে। এখনই না রুখে দিলে বাংলা কাশ্মীর হতে বেশি সময় লাগবে না।
আরও পড়ুন-বিজেপি কি নিরমা ওয়াশিং পাউডার! হায়দরাবাদে বিআরএস-র পোস্টারে শুভেন্দুর ছবি
রবিবার কলকাতার যাদুঘরে এক অনুষ্ঠানে বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিবেক অগ্নিহোত্রী। তাঁর সঙ্গে ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন কাশ্মীর ফাইলসের অভিনেতা অনুপম খেরও। ওই অনুষ্ঠানে বিবেক বলেন, কেউ কেউ বলছেন ভারতে আমরা ৫০০ কাশ্মীর তৈরি করে দেব। এই পাঁচশো কাশ্মীরে কোথায় তা জানি না তবে ৩০০-৪০০ মিনি কাশ্মীর এই বাংলাতেই রয়েছে তা আমি জানি। বাংলার এমনই এক বিপজ্জনক ছবি উঠে আসছে যে এখনই একে রুখে দেওয়া না গেলে বাংলার কাশ্মীর হতে বেশি সময় লাগবে না।
বিজেপি নেতারা প্রায়শই অভিযোগ করে থাকেন, পশ্চিমবঙ্গ জঙ্গিদের ডেরায় পরিণত হচ্ছে। প্রায় সেই ভাষাতেই কথা বললেন বিবেক। শোনা যাচ্ছে তিনি আরও একটি ছবিও তৈরি করবেন। সেখানে থাকবে বাংলার পরিস্থিতি ও ১৯৪৬ এর রাজনৈতিক বাতাবরণ। বিবেকের ওই মন্তব্য নিয়ে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, যাঁর কথা বলছেন তিনি চলচ্চিত্র জগতের কোনও পরিচিত নাম হতে পারেন। কিন্তু তিনি বাংলায় পরিযায়ী হিসেবে এসে বাংলার কৃষ্টি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার সাম্প্রদায়িক বাতাবরণকে দূষিত করছেন। বাংলা মানুষ হিসেবে ওই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করছি। দাবি করছি অবিলম্বে ওই মন্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। ভারতে অন্যতম ধর্মনিরপেক্ষ দল হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখানে সব ধর্মের মানুষ সহাবস্থান করেন। সেখানে তিনি যা বলেছেন তাতে তাঁকে ওই মন্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।
অন্যদিকে, সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ি বলেন, উনি বাংলার কিছু বোঝেন? উনি সংস্কৃতিরও কিছু বোঝেন না। ওকে আরএসএস পয়সা দিয়েছে সেই পয়সায় উনি অসত্য একটা ছবি বানিয়েছেন। উনি ভারত বোঝেন না। ভারতের সংস্কৃতি বোঝেন না। ভারত একটি বহু সংস্কৃতির দেশ। ভারতে কাশ্মীর আছে, বাংলাও আছে। এখানে দুই-ই থাকবে। বরং যারা ভারত বিরোধী তাদেরকে ভারত থেকে বিদায় দেওয়ার দরকার রয়েছে। এসব লোক দেশের পক্ষে বিপজ্জনক। সমাজের শত্রু।
বিবেকের ওই মন্তব্য নিয়ে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, আমরা আগেই দাবি তুলেছিলাম বেঙ্গল ফাইলসও তৈরি হোক। কাটরা মসজিদ নিয়ে রাজ্যে কী পরিস্থিতি হয়েছিল তা আমরা জানি। শীতলকুচি ও দিনহাটার কথা মানুষ জেনে গিয়েছে। এরকম বহু জায়গা রাজ্যে রয়েছে। সেসব নিয়ে কথা উঠছে। কমিউনিস্ট আর টিএমসি ছাড়া বাংলার বদনাম আর কে করেছে? এখন কাশ্মীরকে শান্ত করেছেন নরেন্দ্র মোদী। পশ্চিমবাংলা সেই মোদীর হাতেই শান্ত হবে।
ওই বক্তব্যের শেষ বিবেক অগ্নিহোত্রী তাঁর বক্তব্যর স্বপক্ষে বলতে গিয়ে বলেন, বাংলায় ভয়হীন ভাবে তিনি ঘুরতে পারছেন না। আপনাদের মুখ্যমন্ত্রী বাংলাকে হিংসামুক্ত করতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁর টিমকে কাজ করে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁর ছবির কিছু ইন্টারভিউয়ের জন্য তিনি বিভিন্ন জায়গায় তাঁর টিম পাঠান। তিনি তাঁর টিম ফিরে গিয়ে জানায় বাংলায় তারা কাজ করতে পারবেন না।