মৌপিয়া নন্দী: গরুপাচার কাণ্ডে ১০ দিনের হেফাজতে কেষ্ট। আসানসোল থেকে এবার কলকাতার নিজাম প্যালেসে আনা হচ্ছে অনুব্রত মণ্ডলকে। আদালতের নির্দেশে ইতিমধ্য়েই মেডিক্যাল টিম গঠন করেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
একবার কিংবা দু'বার নয়, টানা দশবার। গরু পাচারকাণ্ডে যতবারই নোটিশ পাঠিয়েছে সিবিআই, ততবারই অসুস্থতার কারণে দেখিয়ে হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। তদন্তে সহযোগিতা করছেন না কেন? অবশেষে বোলপুরের বাড়ি থেকে বীরভূমের কেষ্টকে গ্রেফতার করল সিবিআই।
গ্রেফতারির পর অনু্ব্রতকে নিয়ে যাওয়া হয় আসানসোলে। সিবিআই আদালতকে পেশ করা হয় তাঁকে। লিফ্টে করে চারতলায় ওঠেন 'কেষ্টদা'। তারপরই হাঁফাতে শুরু করেন! শুনানি শুরুতেই অনুব্রতের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন সিবিআই আদালতের বিচারপতি। শুধু তাই নয়, সওয়াল-জবাব চলাকালীন তাঁকে বসে উত্তর দেওয়ার অনুমতি দেন তিনি। গরুপাচারকাণ্ডে অনুব্রতকে ১০ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বিচারপতি রাজেশ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, কোনও কারণে যদি স্বাস্থ্য় পরীক্ষার প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে কলকাতায় কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে ধৃতকে। গঠন করতে হবে ৩ সদস্যের মেডিক্যাল টিমও। এরপরই অনুব্রতকে কলকাতায় আনার তোড়জোড় শুরু হয়।
সূত্রের খবর, এদিন রাতেই তৃণমূলের জেলা সভাপতিকে আনা হবে নিজাম প্যালেসে। শুধু তাই নয়, ৩ সদস্যের মেডিক্যাল টিমও গঠন করে ফেলেছে সিবিআই। ৪৮ ঘণ্টা অন্তর অনুব্রতের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন তাঁরা।
এদিকে অনুব্রতের গ্রেফতারির জেলায় জেলায় 'বিজয় উল্লাসে' মেতে উঠেছেন বিজেপি ও সিপিএম কর্মীরা। বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষকে বিলি করা হয় গুড়-বাতাসা। সঙ্গে নকুলদানা। এমনকী, আসানসোলে সিবিআই আদালতেও রীতিমতো স্লোগান দিতে দিতেই গুড়-বাতাসা বিলি করে দেখা যায় সিপিএম কর্মীদের। জলপাইগুড়ি অনুব্রতের মুখোশ পরে মিছিল বের হয়। পঞ্চায়েত ভোটে এই 'গুড়-বাতাসা' নিদান দিয়েছিলেন অনুব্রতই। বলেছিলেন, 'ব্লক অফিসে গুড়-বাতাসা, জল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন তৃণমূলকর্মীরা। গরমে মনোনয়ন দিতে এলে গুড়-বাতাস আর জল খাওয়ানো হবে'।
আরও পড়ুন: Anubrata Mandal Detained: এটুকু বুঝলাম বল দ্রুত গড়াচ্ছে, অনুব্রতর আটকে রহস্যময় মদন
এদিকে আগামী সপ্তাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দ্বারস্থ হচ্ছেন বোলপুরের বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। কেন? তাঁর দাবি, বাড়ির পরিচারিকা থেকে ব্লক সভাপতি! '৭২ জনের কাছে অনুব্রতের টাকা আছে'। সেই তালিকা তুলে দেবেন শাহকে। বস্তুত, অনুব্রতের মণ্ডলের ছত্রছায়াতেই রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় অনুপম হাজরার। একসময়ে বোলপুরের তৃণমূল সাংসদ ছিলেন তিনি। পরে যোগ দেন বিজেপিতে।