মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: ডেঙ্গি নিয়ে ক্রমশ চিন্তা বাড়ছে রাজ্যে। পুজোর পর থেকেই আরও যেন বাড়বাড়ন্ত। তবে এবার দেখা যাচ্ছে, গোটা রাজ্যের দ্বিগুণ পজিটিভিটি রেট কলকাতায়! রাজ্যের সাপ্তাহিক ডেঙ্গি রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য! বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য দফতরের যে অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গত ২ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গিতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ হাজার ৫৭ জন। অন্যদিকে, গত এক সপ্তাহে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৫ হাজার ৩৯৬ জন। স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, বিগত বছরগুলির মোট আক্রান্তের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে চলতি বছরের ডেঙ্গি আক্রান্তের রেকর্ড।
আরও পড়ুন, Monkeypox: মাঙ্কিপক্সেও বিশ্বে হতে পারে মহামারী? হু এর মন্তব্যে বাড়ছে জল্পনা
কত পজিটিভিটি রেট রাজ্যে? রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে সেই পরিসংখ্যান ১২.৭ শতাংশ। অর্থাৎ ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে আসা প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১২ জনেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। আর কলকাতায় সেই সংখ্যা কত? শহরে ডেঙ্গির পজিটিভিটি রেট হল ২৪.৮ শতাংশ। অর্থাৎ, কলকাতায় ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে আসা ১০০ জনের মধ্যে প্রায় ২৫ জনই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। তবে শুধু কলকাতাতেই নয়, পজিটিভিটি রেটে রাজ্যের গড়ের উপরে রয়েছে জলপাইগুড়ি (২৪.৫%), হুগলী (২০.৮%), কালিম্পং (১৯.৫%), আলিপুরদুয়ার (১৭.৭%), মালদা (১৭.৫%), হাওড়া (১৪.৭%) এবং উত্তর দিনাজপুর (১৪%)।
স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, শুরুর দিকে রাজ্যে দাপট দেখাচ্ছিল ডেঙ্গ-৩ ভ্যারিয়্যান্ট। পরে সংক্রমণের হার বাড়ায় ডেঙ্গ-২-ও। সাধারণভাবে ডেঙ্গির ৪ রকমের সেরোটাইপ বা প্রজাতির দাপট-ই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখা যায়। কোন সেরোটাইপয়ের দাপট বেশি, তার উপর নির্ভর করে রাজ্যের সার্বিক ডেঙ্গি চিত্র। ডেঙ্গ-৩-এর প্রভাবে সাধারণত প্লেটলেট কমে গিয়ে রোগীর বিপদ দেখা দিয়ে থাকে। অন্যদিকে, ডেঙ্গির ডেঙ্গ-২ প্রজাতি রোগীর একাধিক অঙ্গে হানা দিয়ে শক সিন্ড্রোম ডেকে আনে।
কী কী উপসর্গ দেখে বোঝা যাবে?
ফর্টিস হাসপাতালের সংক্রমক ব্যাধি বিভাগের চিকিৎসক ডঃ কীর্তি সবনিস বলেন জানান, হাড়ের জয়েন্টে ব্যথা কিংবা গা-হাত-পায়ে বেদনা, প্রচণ্ড জ্বর, গায়ে র্যাশ বেরনো, বমি আর মাথা ব্যথা, এই সবকটি উপসর্গ থাকলে বুঝতে হবে আপনার ডেঙ্গি হলেও হতে পারে। এছাড়াও ডেঙ্গির আরও গুরুতর কিছু উপসর্গ রয়েছে যেমন- মুখ আর নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ,প্লেটলেট কমে যাওয়া, শরীরের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ হওয়া, চামড়ায় কালো কালো ছোপ দেওখা যাওয়া, পেটে অসম্ভব ব্যথা হওয়া।
আরও পড়ুন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে হলে ডাক্তারদের মানতে হবে নয়া নিয়ম, নির্দেশ স্বাস্থ্য দফতরের