Home> বিনোদন
Advertisement

Debarati Mukhopadhyay: অমানবিক সোশ্যাল মিডিয়া! শয্যাশায়ী লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে তির্যক মন্তব্য

Debarati Mukhopadhyay: ‘১% মানুষ হলেও ফেক প্রোফাইল থেকে গুজব ছড়াচ্ছেন বা বিরূপ মন্তব্য করছেন। সেই ফেকের আড়ালে কারা, তাও আমি জানি। কষ্ট হয়। আমাদের চারপাশে দ্বৈত চরিত্রের মানুষ গিজগিজ করছে! আমি কোনদিন কাউকে নিয়ে কুমন্তব্য বা অশ্রদ্ধা করিনি, করি না। তবু কেন কিছু মানুষ, কিছু অগ্রজ লেখকরাও এমন করেন, বুঝি না।'

Debarati Mukhopadhyay: অমানবিক সোশ্যাল মিডিয়া! শয্যাশায়ী লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে তির্যক মন্তব্য

Debarati Mukhopadhyay, জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বিরল রোগে আক্রান্ত জনপ্রিয় লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায়। বিজয়া দশমীর পর থেকেই পায়ে সাড় পাচ্ছিলেন না তিনি, এরপর ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়েন দেবারতি। পা, হাঁটু থেকে শুরু করে গলা অবধি সারা শরীরই প্যারালাইজড হয়ে যায় লেখিকার। কিন্তু কী থেকে হঠাৎ এক প্রাণোচ্ছ্বল মেয়ে প্যারালাইজড হয়ে গেলেন তার কারণ কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছিলেন না চিকিৎসকরা। সব রুটিন রিপোর্ট ঠিক আসায় তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিল এক হাসপাতালও। তারপর বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। কোন রোগের প্রকোপে এই অবস্থা হয় লেখিকার তা বের করতে ৭ দিন সময় লেগে যায় চিকিৎসকদের।

লেখিকার কথায়, ‘প্রায় উল্কার গতিতে শুরু হয় আমার শারীরিক অবনতি। চোখ ঝাপসা হচ্ছে, গলা পেরিয়ে ফুসফুস তখন অচল হতে শুরু করেছে। তীব্র শ্বাসকষ্ট, অক্সিজেন ৮০ এর ঘরে, আমি জ্ঞান হারিয়েছি। আমায় ICU তে পাঠিয়ে অভিজ্ঞ রিউম্যাটোলজিস্ট, নিউরোলজিস্ট, পালমনোলজিস্টদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে টিম। নার্ভ কনডাকশন টেস্টের পর তাঁরা জানালেন, তাঁরা একটি বিরল রোগের আশংকা করছেন, আশংকা সত্যি কিনা তার জন্য কোমরের হাড় ফুটো করে করতে হবে Lumber Puncture Test. অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক সেই পরীক্ষা করতে হবে এখনই। সবই হয়। ডাক্তারদের আশংকা সত্যি করে রিপোর্ট আসে। আমার যে অসুখটি হয়েছে, তার নাম গুলিয়ান ব্যারি সিনড্রোম, সংক্ষেপে G B Syndrome. ডাক্তাররা জানালেন, এই রোগে শরীরের নীচ থেকে অবশ হওয়া শুরু হয়, অত্যন্ত দ্রুত এগোতে থাকা সেই প্যারালিসিস ধীরে ধীরে প্যারালাইজ করে দেয় ব্রেইন থেকে ফুসফুস সব। ডাক্তাররা এও জানালেন, এই রোগ ১৮৫৯ সালে আবিষ্কৃত হলেও অত্যন্ত বিরল ছিল। কিন্তু একুশ শতকের পৃথিবীতে এই রোগ ক্রমশ বাড়ছে। কারণ? দূষণ, ভেজাল খাবার কিংবা নতুন কোন ভ্যাক্সিন, অনেক কিছু হতে পারে। এই রোগে দেহের ইমিউনো সিস্টেম নিজেই নিজের শত্রু হয়ে উঠে ক্রমশ নিজের দেহের ইমিউনিটি ধ্বংস করতে থাকে। পরিণাম মাল্টি অর্গান ফেলিয়োর, মৃত্যু... কোনভাবেই কিছু না হওয়ায় আমায় ভেন্টিলেশনে দেওয়া হল। কৃত্রিম সেই শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে চলতে লাগল IVIG treatment... পাক্কা সাতদিন পর ভেন্টিলেশন খোলা হল আমার। ডাক্তাররা জানান, আমি নাকি 'মিরাকুলাস ফাইট' করেছি! একটু জন্য ব্রেইন বেঁচে গেছে আমার। আমার এখন হাতদুটো ছাড়া সবই অবশ। তবু সারাদিন চেষ্টা করে যাই কথা বলার, পা নাড়ানোর। কবে অফিস যেতে পারব, স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারব, জানি না। আমি লড়ছি। ডাক্তাররা বলছেন, পুরোপুরিভাবে সুস্থ হতে তিন চারমাস লাগবে। কিন্তু প্রয়োজন vigorous ফিজিওথেরাপির।’

পছন্দের লেখিকার এহেন অবস্থার কথা শুনে প্রার্থনায় সামিল হন তাঁর অনুরাগীরা। কমেন্ট বক্স ভরে ওঠে শুভেচ্ছা বার্তায়। সকলের একটাই প্রার্থনা খুব তাড়াতাড়ি যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন তাঁদের পছন্দের লেখিকা। কিন্তু এরই মাঝে ফুটে উঠল সোশ্যাল মিডিয়ার কিছু অমানবিক মুখ। যাঁরা কোনও অসুস্থ মানুষকেও ছাড় দেয় না। অসুস্থ দেবারতির দিকে ধেয়ে এল কটাক্ষ। এমনকী তাঁর অসুস্থতা নিয়ে মজা করতেও পিছপা হলেন না কিছু অমানবিক ট্রোলার। দেবারতির বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্যের বিরোধীতাও করেন তাঁর শুভাকাঙ্খীরা। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার ট্রোলারদের দেখে কার্যত হতবাক নেটপাড়ার একাংশ। কীভাবে একজন মানুষের মৃত্যুকামনা করতেও পিছপা হয় না ট্রোলাররা! কিন্তু এসব শুনে দমে যাওয়ার পাত্রী নন দেবারতি। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে চোখ রাখলেই দেখা যায়, তাঁর প্রবল মনের জোর, তাঁর যেকোনও বিষয়ের প্রতি পজিটিভ অ্যাটিটিউড, অন্যকে অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতাই তাঁর চালিকা শক্তি। তাই এই যুদ্ধ যে তিনি জিতেই ফিরবেন তা বলাই বাহুল্য। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার এই ব্যবহার দেখে মনখারাপ লেখিকার।

আরও পড়ুন-Anushka Sharma: বেলুড় মঠ-কালীঘাট থেকে সিঙ্গাড়া-রসগোল্লা, কলকাতার প্রেমে অনুষ্কা

রবিবার তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘১% মানুষ হলেও ফেক প্রোফাইল থেকে গুজব ছড়াচ্ছেন বা বিরূপ মন্তব্য করছেন। সেই ফেকের আড়ালে কারা, তাও আমি জানি। কষ্ট হয়। আমাদের চারপাশে দ্বৈত চরিত্রের মানুষ গিজগিজ করছে! আমি কোনদিন কাউকে নিয়ে কুমন্তব্য বা অশ্রদ্ধা করিনি, করি না। তবু কেন কিছু মানুষ, কিছু অগ্রজ লেখকরাও এমন করেন, বুঝি না। আসলে আমার মানসিক জোরটা এতটাই বেশি, যে তাঁরা সম্ভবত মানতে পারছেন না, এই অসুস্থতাতেও আমি টাইপ করেছি বা করিয়েছি। তাঁরা আমার কোনকিছুই মানতে পারেননা। তাঁদের বলব, মানতে না পারুন, একজন অসুস্থ মানুষকে বা একটি রোগ নিয়ে মিথ্যাচার করবেন না। যে কেউ ফর্টিসে যাচাই করতে পারেন। কেউ একজন ওপরে আছেন, তিনি সবই দেখছেন'।

কেমন আছেন দেবারতি? অনুরাগীদের নিজেই জানালেন সে কথা। তিনি লেখেন, ‘বাড়ি ফিরলেও আমার মুখের পেশী অসাড়, একদিকটা বেঁকে আছে এবং নিম্নাঙ্গ এখনো অনেকটাই অবশ। তবে আমি এখন কিছুক্ষণের জন্য হলেও বসতে পারছি। দিনে দুবার ফিজিওথেরাপি চলছে। আশা করি, মাসখানেকে দাঁড়াতে পারব’।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)

Read More