Home> Round Up 2014
Advertisement

বছর সেরা ছাতার তলায় চর্চা...

এই বছর সোশ্যাল মিডিয়া দাপিয়ে বেড়িয়েছে কিছু হ্যাশট্যাগ। কোনও আন্দোলন, কোনও ঘটনা, কোনও ইভেন্ট বা এমনকি কোনও ব্যক্তির নামও এই একটা ছোট্ট হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে আরও অনেক বেশি বিস্তার লাভ করেছে সমাজে। ২০১৪ সালে রাজত্ব করা সেরা কিছু হ্যাশট্যাগ রইল আমাদের পাঠকদের জন্য...

বছর সেরা ছাতার তলায় চর্চা...

ওয়েবডেস্ক: এই বছর সোশ্যাল মিডিয়া দাপিয়ে বেড়িয়েছে কিছু হ্যাশট্যাগ। কোনও আন্দোলন, কোনও ঘটনা, কোনও ইভেন্ট বা এমনকি কোনও ব্যক্তির নামও এই একটা ছোট্ট হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে আরও অনেক বেশি বিস্তার লাভ করেছে সমাজে। ২০১৪ সালে রাজত্ব করা সেরা কিছু হ্যাশট্যাগ রইল আমাদের পাঠকদের জন্য...

fallbacks

ছবি সৌজন্যে- রনি সেনের ফেসবুক পেজ

#ferguson- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্গুসনের মিসোরির রাস্তায় শ্বেতাঙ্গ পুলিস অফিসার ড্যারেন উইলিয়ামস খুন করেন কৃষ্ণাঙ্গ কিশোর মাইকেল ব্রাউনকে। ব্রাউনের মৃত্যু আরও একবার নগ্ন করে দেয় আমেরিকায় বর্ণবৈষম্যের চিত্রটা। প্রতিবাদের ঝড় ওঠে ফার্গুসনে। #ferguson-এর মাধ্যমে সেই প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট গুলিতেও।

#hokkolorob- শুরুটা হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসের মধ্যে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানিকে কেন্দ্র করে। কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়ে সুবিচার না পেয়ে #hokkolorob বা #হোককলরব এই হ্যাশটাগের মাধ্যমে ওই ছাত্রীটিরই এক বন্ধু ডাক দেয় বৃহত্তর আন্দোলনের। সেই আন্দোলনের রেশ ধরে উপাচার্যকে ঘেরাও করে পড়ুয়াদের বিক্ষোভে রাতের অন্ধকারে পুলিসি সন্ত্রাসের খবর সবার জানা। সারা কলকাতায় আরও একবার স্বতঃস্ফূর্ত ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পরে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গেই সারা দেশে #hokkolorob লিখে প্রতিবাদে ভরে যায় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের পাতা। একটা '#' জন্মদেয় আন্দোলনের ভাষার, জন্মদেয় নতুন স্লোগানের।

#kissoflove- কেরালার একটি কাফেতে প্রকাশ্যে চুম্বন করছিল এক যুগল। সিসিটিভে-তে সেই ছবি দেখে কাফেটিতে ভাঙচুর চালায় গোঁড়া হিন্দু সংগঠনের কিছু কর্মী। গেরুয়া বাহিনীর নীতি পুলিসগিরির বিরুদ্ধে কোচির সমুদ্রতটে প্রকাশ্যে গণচুম্বনের ডাক দেয় কেরালারই কিছু যুবক-যুবতী। মাধ্যম ছিল ফেসবুক। #kissoflove-এই হ্যাশট্যাগের কল্যাণে সারা ভারতের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পরে প্রকাশ্যে অনুভূতি, ভালবাসা প্রকাশের গণতান্ত্রিক অধিকারের লড়াই। আওয়াজ ওঠে নীতিপুলিসগিরির বিরুদ্ধে। কলকাতায় #hokchumban বা #হোকচুম্বন এই নামে ডাক দেওয়া হয় প্রকাশ্যে রাজপথে গণচুমুর।

#bandh_bhenge_dao- কেন্দ্রের নির্দেশে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আভ্যন্তরীণ কোটা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। তার প্রতিবাদে সামিল হয় পাঠভবন, শিক্ষাসত্রের কচিকাঁচারা। সঙ্গে যোগ দেন স্নাতক ও স্নাতোকত্তরের ছাত্র-ছাত্রীরাও। ছোটদের  'প্ররোচনার' অভিযোগে স্নাতোক ও স্নাতোকত্তরের ৭ পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করে কর্তৃপক্ষ। প্রতিবাদ শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে না আবধ্য রেখে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও ছড়িয়ে দেয় ছাত্র-ছাত্রীরা। আওয়াজ তোলে  #bandh_bhenge_dao।

fallbacks

#teamfollowback- এ এক মজার '#'। টুইটারে একজন আর একজনকে ফলো করার জন্য একটা টিমই তৈরি করে ফেলে। #teamfollowback এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে টুইটার।

#i cant breath- মাইকেল ব্রাউনকে হত্যা করেও জুরিরা শ্বেতাঙ্গ পুলিস অফিসার ডারেন উইলিয়ামকে নির্দোষ ঘোষণা করে। আরও একবার গর্জে ওঠে ফার্গুসন। এই ঘটনার রেশ ধরে সামনে আসতে থাকে আমেরিকায় রোজ ঘটে যাওয়া একের পর এক বর্ণবৈষম্যের ঘটনা। সামনে আসে এরিক বারনারের মৃত্যুর ঘটনা। এক শ্বেতাঙ্গ পুলিস অফিসারের গুলির শিকার হয়েছিলেন তিনিও। Lil B-এর গানের লাইন 'I can't breath' থেকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বর্ণবৈষম্য বিরোধী লড়াইয়ে জন্ম নেয় নয়া এক হ্যাশট্যাগ- #i cant breath।

#acchedin- ক্ষমতায় আসলে তিনি দেশের জন্য সুদিন নিয়ে আসবেন। এ দেশে লোকসভা নির্বাচনের আগে 'আচ্ছে দিন' ছিল বিজেপির নির্বাচনী মুখ মোদীর ভোট প্রচারের ট্যাগলাইন। ফেসবুকের দৌলতে এই # বদলে গেল চরম খিল্লিতে। মোদীর প্রশংসা নয় উল্টে মোদীর নিন্দা, গুজরাতে মোদীর উন্নয়নের দাবিকে উড়িয়ে #acchedin-এই হ্যাশট্যাগ অবলম্বন করে একের পর এক মোদী বিরোধী পোস্টে ভরে গিয়েছিল ফেসবুক। যার রেশ এখনও অব্যাহত।

#indiawithpakistan- মাত্র দু'দিন আগে তালিবান জঙ্গিদের নৃশংস হামলায় পেশোয়ারে সেনা স্কুলে খুন হয়েছে ১৩১ জন শিশু। চরম নিন্দনীয় জঙ্গি হামলার প্রতিবাদ করে এদেশের মানুষ সমবেদনার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রতি। #indiawithpakistan-অবলম্বন করে এই সমবেদনা এখন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলিতে ছড়িয়ে পড়েছে।

fallbacks

#bringbackourgirls- নাইজেরিয়ায় ২৩৭ জন কিশোরীকে অপহরণ করে রেখেছে বোকো হারেম জঙ্গিরা। 'আমাদের কন্যাদের ফিরিয়ে দাও' আবেদন উঠেছে সারা বিশ্বজুড়ে। bringbackourgirls পোস্টার নিয়ে আবেদন জানিয়েছেন মিশেল ওবামাও। সেই আবেদন সোশ্যাল মিডিয়া জন্ম দিয়েছে #bringbackourgirls।

#messimymessiah- ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে পৃথিবী জোড়া উন্মাদনায় সবথেকে বেশি আলোচিত হয়েছিল বোধহয় আর্জেন্টিনিয়ার সুপারস্টার মেসির নাম। মেসিকে ঈশ্বরজ্ঞানে পুজো করেন এমন ভক্ত সংখ্যাও প্রচুর। বিশ্বকাপের সময় সুপারহিট #messimymessiah।

#OccupyCentral- দেশের প্রথম নির্বাচন। নির্বাচনে কারা প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন সেটাও ঠিক করে দিয়েছিলেন চিন সরকার। প্রতিবাদে স্বতস্ফূর্ত প্রতিবাদে নেমেছিলেন হংকং-এর হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী। আজও এ আন্দোলন অব্যাহত। ওকুপাই ওয়ালস্ট্রিটের ঢঙে তাঁরা ডাক দিয়েছিলেন Occupy Central-এর। সঙ্গে একটা '#' জুড়ে যে আন্দোলন সারা বিশ্বজুড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর সমর্থন কুড়িয়েছে।

#Ebola- এই বছরের শুরুর দিক থেকেই মারণ রোগ ইবোলায় আক্রান্ত পশ্চিম আফ্রিকার বহু দেশ। বছর শেষ হতে চললেও প্রভাব কিছুটা কমলেও এখনও নির্মূল হয়নি এই রোগের ভাইরাস। 'হু' এপিডেমিক ঘোষণা করেছে ইবোলাকে। এখনও পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে এর ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমেনি। সোশ্যালমিডিয়াও বাদ যায়নি ইবোলা সচেতনার মাধ্যম হিসেবে। সঙ্গি #Ebola।

fallbacks

#YaMeCanse- মেক্সিকোতে সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদে পথে নেমেছিল ছাত্র-ছাত্রীরা। হঠাৎই কীভাবে 'হাওয়া' হয়ে যায় ৪৫ জন প্রতিবাদী ছাত্র। বেশ কিছুদিন পর যানা যায় মারা গেছেন প্রত্যেকেই। #YaMeCanse মাধ্যমে সারা পৃথিবী আওয়াজ তোলে এই ৪৫ জনের মৃত্যুর প্রতিবাদে।

#icebucketchallenge- নিজের উপর এক বালতি বরফ ঢালো। ঠাণ্ডায় কাঁপতে, কাঁপতে একজন নিজের উপর এক বালতি বরফ ঢেলে সেই ভিডিও আপলোড করছিলেন ইউটিউবে। সেই ভিডিওতেই এই দুঃসাধ্য কাজটি করতে চ্যালেঞ্জ জানাছিলেন অন্য কোনও ব্যক্তিকে। এই মজাদার আইস বাকেট চ্যালেঞ্জে যোগদান পৃথিবীর বিখ্যাত বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরা। বিখ্যাত হয়ে যায় #icebucketchallenge।

#SydneySiege- সিডনির একটি কাফেতে কিছুদিন আগেই বন্দুকহাতে ঢুকে পড়েছিল এক ব্যক্তি। এই চরমপন্থী বন্দুকধারী পণবন্দী করে রেখেছিল প্রায় ৩০জনকে। টানা ১৭ ঘণ্টার চরম উত্তেজনা পর্বের পর পুলিসের সঙ্গে বন্দুকধারীর গুলির লড়াইয়ে প্রাণ যায় দু'জনের। মারা যায় বন্দুকধারীও। মুক্তি পান পণবন্দীরা। এই ১৭ ঘণ্টা এই ঘটনা সম্পর্কিত যে কোনও পোস্টের সঙ্গে জুড়ে যায় #SydneySiege।

#amessagefromisistous- এই বিশেষ '#' দেখতে পাওয়া যায় যে কোনও আইসিস পন্থী সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের পেজে। এর অর্থ 'a message from isis to us' অর্থাৎ আইসিস-এর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একটি বার্তা। এই '#' এবছরের অন্যতম সেরা জনপ্রিয়।

fallbacks

#freepalestine- গাজা উপত্যকায় ইজরায়েলি হানার প্রতিবাদে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বিখ্যাত হয় এই হ্যাশট্যাগ। গাজাকে কেন্দ্র করে ইজরায়েলের সঙ্গে হামাসের অসম যুদ্ধে প্রাণ যায় প্রায় ২১০০ জন প্যালেস্তানীয়র। যাদের বেশিরভাগই শিশু ও সাধারণ নাগরিক। উল্টো দিকে হামাসের আক্রমণে ইজরায়েলের ৭১জন মারা যান। যার মধ্যে অধিকাংশই সেনা।

#putouturbats-  অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া লিগে বহুদিনের বন্ধু শন অ্যাবটের একটা বাউন্সার হঠাৎ এসে আঘাত করে ফিলিপ হিউজেসের হেলমেটে। কে জানত ওই একটা বাউন্সারের এতটা প্রাণঘাতী ক্ষমতা আছে। মারা যান হিউজেস। তাঁর শোকে স্তব্ধ হয় গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। তাঁর সম্মানে এক দিন ব্যাট নামিয়ে রাখার আহ্বান জানানো হয়। সেই আহ্বান #putouturbats হাত ধরে ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতেও।

#freesalmannow- 'অপরাধ' ছিল সিনেমা দেখতে গিয়ে যখন জাতীয় সঙ্গীত বাজছিল তখন সে ওর তার সঙ্গীরা নাকি উঠে দাঁড়াইনি। সেই 'অপরাধে' কোচির যুবক সলমন জলমনকে বন্দি করে কেরালা পুলিস। সলমনের মুক্তির দাবিতে ফেসবুকে #freesalmannow নামে তৈরি হয় পেজ। আওয়াজ ওঠে গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের বিপক্ষে।

 

 

Read More